মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
বিমাবন্দরে আগুন ফ্যাসিস্ট হাসিনার নাশকতার অংশ : আমান উল্লাহ বাড়িভাড়া বৃদ্ধি হওয়ায় ‘সন্তুষ্ট’ শিক্ষকরা, আন্দোলন স্থগিত বিএনপির সাথে মার্কিন আইআরআই প্রতিনিধিদলের বৈঠক আদর্শ সমাজ বিনির্মানে আলেম-ওলামা ও সমাজের বিশিষ্টজনদের এগিয়ে আসতে হবে : আব্দুল আউয়াল ‘নির্বাচনে খুব একটা উৎসাহিত না, করলে তিনটি আসনের কোনোটিতে করব’ রুপসার ইলাইপুরে হাতপাখা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার রোধে কেন্দ্রীয় সেল গঠনের ঘোষণা সিইসির ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মসজিদের অজুখানা নিয়ে সংঘর্ষ : আহত ২০, গ্রেফতার ৪ ইসলামি দলগুলো আদর্শিক দেউলিয়াপনার পরিচয় দেয় কেন? দলের অসুস্থ নেতাকে দেখতে গেলেন জমিয়ত সভাপতি

নবি যুগে যেসব খেলাধুলা করা হতো

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বিভিন্ন হাদিসের আলোকে প্রমাণিত হয় যে খেলাধুলা ইসলামে বৈধ এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রশংসিত ও পছন্দনীয়। তবে খেলাধুলার উন্মাদনায় বুঁদ হয়ে আল্লাহ-রাসুল, নামাজ-রোজা, ইবাদত-বন্দেগি ও পরকালকে বেমালুম ভুলে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। এ ব্যাপারে আছে বিশেষ সতর্কবাণী ও কঠিন শাস্তির ঘোষণা।

কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘এক শ্রেণির মানুষ এমন আছে, যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশ্যে ‘লাহওয়াল হাদিস’ তথা অবান্তর কথাবার্তা ক্রয় করে অন্ধভাবে এবং তা নিয়ে করে ঠাট্টা-বিদ্রুপ। এদের জন্য আছে অবমাননাকর শাস্তি।’ (সুরা লুকমান, আয়াত: ৬)

রাসুলুল্লাহ সা. মুমিনদের উপকারী শরীরচর্চা ও বৈধ বিনোদনের অনুমতি দিয়েছেন। বিশেষত যেসব খেলাধুলা ও শরীরচর্চা মুমিনের ব্যক্তিগত উপকার ও সমাজের কল্যাণ আছে তার অবকাশ ইসলামে আছে।

ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা

রাসুলুল্লাহ সা. স্বয়ং ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা করিয়েছেন। এই প্রতিযোগিতা হাফয়া থেকে শুরু হয়ে সানিয়্যাতুল বিদায় শেষ হতো।

বর্ণনাকারী বলেন, আমি মুসা (রা.)-কে বললাম, এর দূরত্ব কী পরিমাণ হবে? তিনি বললেন, ছয় বা সাত মাইল। আর প্রশিক্ষণহীন ঘোড়ার প্রতিযোগিতা শুরু হতো সানিয়্যাতুল বিদা থেকে এবং শেষ হতো বনু জুরাইকের মসজিদে। আমি বললাম, এর মধ্যে দূরত্ব কত? তিনি বললেন, এক মাইল বা তার তদ্রুপ। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-ও এই প্রতিযোগীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৭০)

তীর নিক্ষেপ

রাসুলুল্লাহ সা. তীর নিক্ষেপকে উৎসাহিত করে বলেন, ‘আল্লাহ একটি তীরের অসিলায় তিনজন লোককে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন—তীর নির্মাতা যে নির্মাণকালে কল্যাণের আশা করেছে, এই তীর নিক্ষেপকারী এবং তা নিক্ষেপে সাহায্যকারী। তিনি আরো বলেন, তোমরা তীরন্দাজি কোরো ও ঘোড়দৌড় শিক্ষা করো। তবে তোমাদের ঘোড়দৌড় শেখার তুলনায় তীরন্দাজি শেখা আমার কাছে বেশি পছন্দনীয়। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৬৩৭)

মল্লযুদ্ধ

ইসলামের সোনালি যুগে প্রচলিত একটি খেলা ছিল মল্লযুদ্ধ। এমনকি দ্বিন প্রচারের স্বার্থে মহানবী (সা.) নিজেও একবার মল্লযুদ্ধে অংশ নেন।

মক্কার একজন বিখ্যাত মল্লযোদ্ধা ছিল রুকানা বিন ইয়াজিদ। একদিন মহানবী সা. তাঁকে দ্বিনের দাওয়াত দিলে সে তা প্রত্যাখ্যান করে। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বলেন, আমি যদি মল্লযুদ্ধে তোমাকে পরাজিত করি, তবে কি তুমি আল্লাহর ওপর ঈমান আনবে? রুকানা তাতে সম্মত হলো। অতঃপর মহানবী (সা.) তাঁকে মল্লযুদ্ধে পরাজিত করেন। (সিরাতে ইবনে হিশাম : ১/৩৯০)

হাঁটার প্রতিযোগিতা

দ্বিনের দাওয়াত, যুদ্ধের অভিযান ও জীবিকার অনুসন্ধানে বের হওয়ার পর তখনকার মানুষের ভেতর দ্রুত হাঁটার প্রতিযোগিতা হতো। দ্বিনি কাজে বের হয়ে এমন প্রতিযোগিতা করাকে মহানবী (সা.) উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুই গন্তব্যের মধ্যে হাঁটে তাঁর প্রতি পদক্ষেপে আছে প্রতিদান। ’ (সুনানে তিবরানি: ২/১৮০)

পশুর প্রশিক্ষণ

রাসুলুল্লাহ (সা.) বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয় এমন পশুকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেক এমন জিনিস, যাতে আল্লাহর স্মরণ নেই তা অর্থহীন বা ভুল, তবে চারটি বিষয় ছাড়া। তা হলো, দুই লক্ষ্যের মাঝে চলা, ঘোড়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, স্ত্রীর সঙ্গে হাসি-কৌতুক করা, সাঁতার শেখা। ’ (সুনানে কুবরা লিল-নাসায়ি, হাদিস : ৮৯৪০)

ভারোত্তোলন

তৎকালীন আরব সমাজে ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতাও ছিল। বলা হয়ে থাকে, সাহাবি জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)-এর মাথায় এই খেলার ধারণা প্রথম আসে।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর এমন একদল মানুষের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যারা পাথর উত্তোলন করছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তাদের কী হয়েছে? একজন বলল, তারা পাথর উত্তোলন করছে এবং দেখছে তাদের মধ্যে কে বেশি শক্তিশালী। তিনি বলেন, আল্লাহর পথের কর্মীরা তাদের চেয়ে শক্তিশালী। (ইরওয়াউল গালিল : ৫/৩৩৩)

সাঁতার প্রতিযোগিতা

রাসুলুল্লাহ (সা.) সাঁতার শিখতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেক এমন জিনিস, যাতে আল্লাহর স্মরণ নেই তা অর্থহীন বা ভুল, তবে চারটি বিষয় ছাড়া। তা হলো, দুই লক্ষ্যের মাঝে চলা, ঘোড়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, স্ত্রীর সঙ্গে হাসি-কৌতুক করা, সাঁতার শেখা। ’ (সুনানে কুবরা লিল-নাসায়ি, হাদিস : ৮৯৪০)

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ