ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরান যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুঁড়ছে সেগুলো নিজেদের আকাশসীমায় ভূপাতিত করছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ জর্ডান। এছাড়া ইরানের ওপর হামলা চালাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলোকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতিও দিয়েছে দেশটি। এর আগেও বিভিন্ন মুসলিম দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত চলাকালে ইহুদিবাদী দেশটিকে সমর্থন করেছে জর্ডান।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে- মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া খ্যাত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বেশির ভাগ আরব রাষ্ট্র যখন ইরানের প্রতি সংহতি জানাচ্ছে জর্ডান কেন এর বিপরীত।
জর্ডান প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র। ২০২১ সালের শুরুতে জর্ডান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী সামরিক প্রশিক্ষণ, অনুশীলন কৌশল এবং ট্রানজিটের মতো বিভিন্ন কার্যকলাপের জন্য মার্কিন সামরিক কর্মীদের জন্য জর্ডানে নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে এতে জর্ডানের যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কোনো সামরিক অভিযানে সহায়তার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
অন্যদিকে ১৯৯৪ সালের ইসরায়েলের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করে জর্ডান, তবে দুটি দেশের মধ্যে একে অপরকে সামরিকভাবে সমর্থন করার কথা উল্লেখ নেই।
মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার ক্ষেত্রে জর্ডানের সিদ্ধান্তের পেছনে অন্যান্য কারণও রয়েছে। কিছু ড্রোন অথবা ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েলের ওপর না পড়ে জর্ডানের ভূখণ্ডে পড়েতে পারে। আম্মানের যুক্তি তারা ইসরায়েলকে সমর্থন করার চাইতে ইরানের ভুলভাবে ছোড়া ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিজস্ব ভূখণ্ডকে রক্ষা করছে।
জর্ডানের সেনাবাহিনী বলছে, তারা মূল্যায়ন করেছে ইরানের ছোড়া কোন ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে পারে এবং কোনগুলো জর্ডানে অবতরণ করতে পারে।
তবে ইরানের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষায় জর্ডানের অংশগ্রহণের কারণ যাই হোক না কেন, তা ইসরায়েল এবং তার বন্ধুদের সম্মিলিত প্রতিরক্ষামূলক প্রচেষ্টাকে সাহায্য করেছে- যার ফলে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর জন্য, ইসরায়েল জর্ডানের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। যদিও মুসলিম বিশ্বের শত কোটি মানুষ ক্ষুব্ধ হচ্ছে জর্ডানের ওপর।
এনএইচ/