শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


নিত্যপণ্যের চড়া মূল্য, ভালো নেই ইমাম-মুয়াজ্জিনরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| কাউসার লাবীব ||

দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। শহর ও গ্রামের চিত্র একই। অগ্নিমূল্যে দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ইমাম-মুয়াজ্জিনদেরও অবস্থা তাই। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ভালো নেই ইমাম-মুয়াজ্জিনরা। অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।

ইমাম-মুয়াজ্জিনদের এ অভাবের চিত্র শহরের তুলনায় গ্রামে আরও প্রকট।  গ্রামাঞ্চলের বেশ কয়েকজন ইমাম-মুয়াজ্জিন বলছেন, পরিবার নিয়ে বেশিরভাগ দিনই সবজি বা ডাল দিয়ে খেয়ে কোনমতে জীবনযাপন করছেন তারা। চড়ামূল্যের কারণে কখনো আবার সবজিও কেনা কঠিন হয়ে যায়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে অনেকে আবার ধার-দেনা করেও সংসারের ঘানি টানছেন।

দেশে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন-ভাতা বাড়ছে না। বেতনের পরিমাণও নগণ্য। অনেকের বেতন তো উল্লেখ করার মতোও নয়। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, বাসাবাড়ির ভাড়া, যাতায়াত খরচ ও চিকিৎসা খরচসহ সবকিছুই ঊর্ধ্বমুখী। ধনী, গরিব, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সময়ে সময়ে বাড়ানো হয়। কিন্তু ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাসিক সম্মানী ভাতা একই থেকে যায় যুগ যুগ ধরে। যদিও মসজিদের নির্মাণ বেয়ে মাঝে মাঝে কোটি টাকা খরচ করতে দেখা যায় মসজিদ কমিটিকে।

একটি মসজিদে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব পালন করেন একজন ইমাম। নামাজের আগে নির্ধারিত সময়ে আজান ও ইকামত দেন একজন মুয়াজ্জিন। ঝড়-বৃষ্টি কিংবা কনকনে শীত সবকিছু ছাপিয়ে তারা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন দিনের পর দিন।

দেশের শহরাঞ্চলে মসজিদগুলোর ইমামদের বেতন ৭ থেকে ১৫ হাজার টাকা বা কমবেশি। মুয়াজ্জিনদের বেতন ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা। আর গ্রাম্য এলাকার মসজিদগুলোর ইমামদের বেতন ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা এবং মুয়াজ্জিনদের বেতন ২ থেকে ৪ হাজার টাকা। গ্রামে অনেক সময় দেখা যায় ইমাম এবং মুয়াজ্জিনের কাজ একই ব্যক্তি করছেন। মসজিদ পরিচ্ছন্নের কাজও করছেন ইমাম। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির লাগামহীন ছুটাছুটিতে সাধারণ মানুষ যখন দিশেহারা সেখানে নামমাত্র বেতনে কাজ করছেন ইমাম-মুয়াজ্জিনরা। মসজিদ কমিটি খবর রাখছে না, হাতে গোনা সামান্য এ টাকায় কীভাবে জীবন অতিবাহিত করছেন তারা।কোনো কোনো গ্রামের মসজিদে আবার নির্ধারিত বেতন নেই। মৌসুমভিত্তিক ধান বা সাপ্তাহিক মুষ্টি চাল তুলে তাদের দেয়া হয়। কোনো কোনো গ্রামের মসজিদে মাসে ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা বা বছরে ৪-৫ হাজার টাকা দেয়া দেয়া হয়।

আসলে একজন ইমাম সবার মতোই মানুষ, তাদেরও পরিবার আছে, তাদেরও স্বচ্ছলভাবে বেঁচে থাকতে মন চায়। দেশে যেকোন প্রতিষ্ঠান চালাতে সরকারের নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে কিন্তু মসজিদ পরিচালনার জন্য কোন গাইডলাইন নেই বলে অভিযোগ অনেকের। দেশের ছোট-বড় সব মসজিদের তালিকা করে শ্রেণিভেদে ইমামদের বেতন কাঠামো তৈরি করা সময়ের দাবি।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ