মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫ ।। ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৬ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
জুলাই স্মরণে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন-এর দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা মানবিক-ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার সময় এখনই : তারেক রহমান যেকোনো দিন গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে: ট্রাম্প জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার ইসলাহি মজলিস বৃহস্পতিবার ‘জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে না পারা এই সরকারের বড় ব্যর্থতা’ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেই মৃত্যুদণ্ড, ইরানে নতুন আইন ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের আহ্বান ইরানি সুন্নি আলেমদের মিশরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের গৌরবময় অর্জন আফগানিস্তানে অনৈসলামিক কার্যকলাপের অভিযোগে গুঁড়িয়ে দেয়া হল মাজার দুঃখ প্রকাশ না করা পর্যন্ত শান্তি পাবে না: আ. লীগকে শফিকুল আলম

সাংবাদিকতা ও বাংলা ভাষাচর্চায় আলেমসমাজ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।। সাআদ তাশফিন ।।

মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী সাপ্তাহিক সোলতান ও দৈনিক আমীরের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। মওলানা আকরম খাঁ মাসিক মোহাম্মদী ও দৈনিক আজাদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। দৈনিক আজাদ বিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ-শাসিত ভারতে প্রবর্তিত একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকা ছিল।

মওলানা আকরম খাঁ বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ এবং বাঙালি মুসলিম সমাজে সাংবাদিকতার জনক।

আধুনালুপ্ত দৈনিক আজাদের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত। তবে সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি একজন সুলেখক, ধর্মবেত্তা, সমাজসেবক ও সময়ের প্রভাবশালী রাজনীতিকও ছিলেন।
সব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে তিনি ছিলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম বাঙালি মুসলিম নেতা। মওলানা আকরম খাঁ তাঁর ধর্মাচার, লেখালেখি, সাহিত্যচর্চা, সাংবাদিকতা, সব কিছুর বিনিময়ে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা ও মুসলিম স্বাধিকারের পক্ষে অবিরাম লড়াই করেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের জন্য তিনি জেল খাটেন এবং নিষিদ্ধ হয় তাঁর সম্পাদিত মাসিক মোহাম্মদী।

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী দৈনিক ইত্তেফাক ও সাপ্তাহিক হক কথার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন।

মাওলানা মুহিউদ্দীন খান টানা প্রায় ৬০ বছর (আমৃত্যু) মাসিক মদীনার (প্রতিষ্ঠা ১৯৬১ খ্রি.) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। বাঙালি মুসলমানের পছন্দের পত্রিকা ছিল এটি। বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুত্ফুর রহমান এই পত্রিকার নিয়মিত পাঠক ছিলেন। ১৯৭২ সালে তৎকালীন তথ্য মন্ত্রণালয় অনেক পত্রিকার সঙ্গে মাসিক মদীনার প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। তখন মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রহ.)-এর কাছে ‘প্রিয় মদীনা পত্রিকা ছাড়া সময় কাটানো অনেক কষ্টকর মর্মে চিঠি পাঠান’ বঙ্গবন্ধুর পিতা।

ফুরফুরার পীর মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী, জৌনপুরীর পীর মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী, শর্ষিনার পীর মাওলানা নেছারউদ্দীন, হাকিমুলউম্মত আশরাফ আলী থানভির বাংলাদেশি দুই খলিফা মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী ও মাওলানা আতহার আলী এঁরা সবাই মাতৃভাষায় সাহিত্য-সাংবাদিকতা চর্চায় ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এঁদের কেউ কেউ একাধিক দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকাও প্রকাশ করেছেন।

মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী ও মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী মাতৃভাষায় প্রচুর লেখালেখিও করেছেন। তাঁদের নামে শত শত বই রয়েছে।

মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, মওলানা আকরম খাঁ, মৌলভী মজিবর রহমান খাঁ, মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী, মাওলানা রুহুল আমীন (পশ্চিম পরগনা), মাওলানা নূর মুহাম্মদ আজমী, মাওলানা আব্দুল মজিদ খাঁ, মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, খতিবে আযম মাওলানা সিদ্দিক আহমদ, মওলানা আবদুর রহীম, শাইখুল হাদিস আল্লামা আজীজুল হক, মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মাওলানা আখতার ফারুক, মাওলানা উবাইদুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, কবি মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী আল আযহারী, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ, মাওলানা আবু সাঈদ মুহাম্মদ উমর আলী, মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ, মাওলানা ইসহাক ফরিদী, মাওলানা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়াসহ হালজামানার মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ ও মাওলানা যাইনুল আবিদীন-এঁদের হাতে উল্লেখ করার মতো বহু ইসলামী বইপুস্তক রচিত হয়েছে। বাংলার প্রতিটি মুসলিম ঘরে ঘরে খুঁজলে এঁদের কারো না কারো বই পাওয়া যাবে।

সূত্র: ইসলামী জীবন, বাংলা সাহিত্যে মুসলমান : আবদুল মান্নান সৈয়দ, একুশের মাওলানারা: শাকের হোসাইন শিবলি।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ