মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ ।। ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৬ জিলকদ ১৪৪৫


কে হচ্ছেন আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের মহাসচিব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।। কাউসার লাবীব ।।

গত ২১ জুন চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতী আব্দুল হালিম বুখারী রহ.। গুণী এ আলেমের মৃত্যুতে শূন্য হয় বোর্ডটির মহাসচিবের পদ। বর্তমানে বোর্ডের নির্বাহী বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন সহ-মহাসচিব মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ।

শূন্যপদ পূরণে কে আসছেন আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের মহাসচিবের চেয়ারে? এ প্রশ্ন দেশের নানাজনের। জানা যায়, এর সঠিক উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী রবিউল আউয়াল পর্যন্ত।

বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী রবিউল আউয়াল মাসে আমাদের আসন্ন কাউন্সিল। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে দেশের প্রাচীন এ বোর্ডের মহাসচিব পদে কে আসছেন!

তবে বর্তমানে সহ-মহাসচিব পদে থাকা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহকেই বোর্ডটির মহাসচিব পদের জন্য এগিয়ে রাখছেন অনেকে।

প্রসঙ্গত, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত একটি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড; যা আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার অধীনে পরিচালিত হয়। ১৯৫৯ সালে জামিয়া পটিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আজিজুল হকের তত্ত্বাবধানে মাওলানা হাজী মুহাম্মদ ইউনুস এই বোর্ডটি গঠন করেন। বর্তমানে এই বোর্ডের অধীনে ৬০০ টি মাদ্রাসা আছে। প্রতি বছর বোর্ডের অধীনে ৬টি কেন্দ্রীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে আছেন আল্লামা সুলতান যওক নদভী।

কওমি মাদ্রাসাসমূহের সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, তত্ত্বাবধান এবং পাঠ্যসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে সামঞ্জস্য ও ঐক্য বহাল রাখার লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আজিজুল হকের উদ্যোগে দেশের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাবোর্ড ‘আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠাতার জীবদ্দশায় মাদ্রাসাগুলাের পরিচালনা পদ্ধতিস্বরূপ উর্দু ভাষায় “দস্তুরে আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস ” নামে একটি সংবিধান রচিত হয়। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই সংবিধানের সংশােধন এবং তাতে অনেক বিষয় সংযােজনের প্রয়ােজন দেখা দেয়। তদুপরি পরিচালনাধীন মাদ্রাসাগুলাের পক্ষ থেকে মাতৃভাষায় সংবিধান রচনার দাবি উত্থাপিত হতে থাকে।

অনুরূপ পরিস্থিতিতে মাওলানা হাজী মুহাম্মদ ইউনুসের জীবদ্দশায় ১৯৯১ সালের ১২ জানুয়ারি তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইত্তেহাদের মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশনে বাংলা ভাষায় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কওমি মাদ্রাসা সংবিধান রচনার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আর খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করার জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত সাব কমিটি ১৯৯২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে অনুমােদনের জন্য মজলিসে শুরা বরাবর পেশ করে।

অতঃপর মজলিসে শুরার ১৯৯২ সালের ১২ ডিসেম্বর ইত্তেহাদের তদানীন্তন সভাপতি হারুন ইসলামাবাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে খসড়াটি পঠিত হয় এবং বিস্তারিত আলােচনা -পর্যালােচনা, পরীক্ষা - নিরীক্ষা এবং প্রয়ােজনীয় সংশােধন - সংযােজনের পর তা “ কওমি মাদ্রাসা সংবিধান, বাংলাদেশ ” রূপে অনুমােদন লাভ করে। উক্ত তারিখ থেকে সংবিধানের কার্যকরীকরণ এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তদুপরি উক্ত তারিখ থেকে এ সংবিধানের পরিপন্থী পূর্বের যাবতীয় দস্তুর, সংবিধান ও আইন-কানুন রহিত ঘােষিত হয়।

পরবর্তীতে মজলিসে শুরার বিভিন্ন অধিবেশনে বিভিন্ন সংশােধনী অনুমােদিত হয়। অধিবেশনে এ সংবিধানের আরবি নাম ঘােষিত হয়, “দস্তুরুল মাদারিস আল-ইসলামিয়াহ আল-আহলিয়্যাহ, বাংলাদেশ”। ইত্তেহাদের পরিচালনাধীন প্রতিটি কওমি মাদ্রাসার জন্য অত্র সংবিধান অনুসরণ এবং এর আইন - কানুনগুলাের সার্বিক বাস্তবায়ন অপরিহার্য গণ্য হয়।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ