শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন আলেমরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম।। পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত পদ্মা সেতু একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। সেতুটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া, লৌহজংকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এর ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত উত্তর-পুর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতুর কাজ করেছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৪৮ কিলোমিটার (সড়ক) এবং ৫৩২ মিটার (রেল)। পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য মোট খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে ১ হাজার ৪৭১ হেক্টর। এর পাশাপাশি মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও জাজিরা প্রান্তে ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার নদী শাসন করতে হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে দেশের দীর্ঘতম এ সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানিয়েছেন দেশে সর্বোস্তরের জনগণ। আলেমরাও লিখেছেন পদ্মা সেতু নিয়ে। অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে।

শোলাকিয়া জাতীয় ঈদগাহের ইমাম, জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার সভাপতি, ইকরা বাংলাদেশের পরিচালক আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পদ্মাসেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা, উন্নয়ন ও মর্যাদার প্রতীক। পদ্মাসেতু আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথনকশায় এক নতুন আশা-সঞ্চারি মাইলফলক। এর মাধ্যমে কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, ইনশাআল্লাহ পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতিই বদলে যাবে। দেশের প্রতিটি নাগরিকই এর সুফল ভোগ করবে। এই গৌরবের অংশীদার আমরা সবাই।

আল্লামা মাসঊদ বলেন, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় এবং অশেষ কৃপায় নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে পদ্মাসেতু বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সারা পৃথিবী একসাথে বিরোধিতা করলেও আল্লাহ যা চান তাই হয়ে থাকে। কোটি কোটি বান্দার প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করেছেন, তিনি চেয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর হোক, এজন্যই বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিল করার পরেও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে আল্লাহ পাক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাওফীক দিয়েছেন। ফলে সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আল্লাহর কৃপা ও সন্তুষ্টির নিদর্শন রূপে এই সেতু আজ আমাদের সামনে। আমরা আল্লাহ তাআলার অনিঃশেষ শোকর আদায় করি।

বহু বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে, মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের স্বপ্নের পদ্মাসেতু আজ প্রস্তুত। তাই সেতু উদ্বোধনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গবন্ধু-কন্যাকে জানাই অভিনন্দন। কারণ আত্মশক্তিতে বলিয়ান বঙ্গবন্ধু-কন্যার বলিষ্ঠ ও সাহসী নেতৃত্বে এই মহতী কাজ সম্ভব হয়েছে। আকাঙ্ক্ষিত পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যেন সুষ্ঠু-সুন্দর ও সুচারুরূপে সমাপ্ত হয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয় এজন্য আমরা আল্লাহর কাছে দুআ করি। পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দুষ্টচক্রের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন, এই সেতুকে আল্লাহ সুদীর্ঘ স্থায়অত্ব দান করুন, এর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন, আমিন।

আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশণের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহ বলেন পদ্মা সেতু আমাদের সম্পদ, দেশের অমূল্য সম্পদ। ফেরিঘাটে যে কত শত ঘন্টা অপেক্ষার যন্ত্রণা সয়েছি— তার কোনো হিসেব নেই। গর্ব কিংবা অহংকার নয়, আল্লাহর নিকট অসংখ্য শুকরিয়া জানাই। হে আল্লাহ, এ সেতুকে আপনি আমাদের জন্য টেকসই ও উপকারী করুন।

লেখক গবেষক মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ লিখেন, পদ্মাসেতু আমাদের সম্পদ, বাংলাদেশের সম্পদ। অহংকার নয়, দরকার আল্লাহ তাআলার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। দরকার দোয়া করতে থাকা, যেন এর স্থায়িত্ব দীর্ঘকালের হয়, যেন এর দ্বারা দেশ ও মানুষের অধিকতর উপকার হয়।

জামিয়া এজাজিয়া দারুল উলুম রেলস্টেশন মাদরাসা যশোরের মুহতামিম, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সহ-সভাপতি, যশোর জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি, মাওলানা আনোয়ারুল করীম যশোরী বলেন, পদ্মা সেতু দেশের মানুষের জন্য আল্লাহ তায়ালার এক বড় নেয়ামত, পদ্মা সেতু নির্মাণ সফলভাবে সমাপ্ত করায় আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া জ্ঞাপন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মোবারকবাদ-অভিনন্দন জানাচ্ছি।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ