মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১ জিলকদ ১৪৪৬


ময়লার স্তুপে আজ সংগ্রামরা পড়ে থাকে নিঃস্ব-অসহায়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তামিম আহমেদ

এ ব্যস্ত শহরে আমিও ব্যস্ত। প্রতিদিনের মত আজও অফিসের ব্যস্ততা বেশি। অফিসে প্রচুর কাজ ছিল। প্রায় ১টা বেজে গেছে অফিস থেকে বের হতে।

গরম খুব বেশি। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরছি। দোকান থেকে ঠাণ্ডা পানির বোতল কিনে বাসা দিকে হাঁটছি। হঠাৎ দেখি ময়লার স্তুপে ছোট্ট একটি ছেলে কী যেনো করছে।

ছেলেটাকে বললাম কি করো এখানে? ছেলেটা কান্না করতে করতে বলল ভাই, আমি ময়লার স্তুপে মানুষের ফেলে দেয়া খাবার খেয়েই বেঁচে আছি।

খেতে পাই না কী করবো। আমি ছোট বলে আমাকে কেউ কাজেও রাখে না। আমার অনেক মায়া লাগলো। বললাম চলো আমার সাথে, দোকানে এনে পেট ভরে খাওয়ালাম।

ছেলেটা অনেক খুশি। বললাম এখন কেমন লাগছে? ছেলেটা হেসে হেসে বলল অনেক ভালো লাগছে। ছেলেটার খুশি দেখে আমারও অনেক আনন্দ লাগলো।

ছেলেটা সম্পর্কে আমার জানতে ইচ্ছে হচ্ছিলো। আমি তাকে বললাম তোমার নাম কি? ছেলেটা বললো ভাই জন্মের পর থেকেই আমার মা-বাবা কে জানি না। তাই নিজের নাম নিজেই রেখেছি সংগ্রাম।

বললাম থাক কোথায়? বললো, ভাই আমার পৃথীবিতে কেউ নাই। তাই যেখানেই পারি ঘুমিয়ে যাই। তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে বাসার সামনে চলে আসি।

আমি তাকে বললাম চলো বাসায় যাই। সে কোনোভাবেই বাসায় যেতে রাজি হলো না। অনেকবার বলছি তারপরেও যায় নাই ছেলেটা। সে আমাকে বলল আমি যেদিন নিজে ইনকাম করতে পারবো সেদিন নিজে বাসা নিয়ে থাকবো। এর আগে কারো বাসায় যাবো না।

আমি তাকে আমার ফোন নম্বরটা দেই। বলি কিছুর প্রয়োজন হলে ফোন দিও। ছেলেটাকে আমি ১০০ টাকা দিলে সে খুশি হয়ে চলে যায়।

পরে প্রতিদিন ইফতারের আগে আমার বাসার সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছু ইফতার কিনে দিলেই চলে যায়।এভাবে প্রায় ৫দিনের মত আসে।

পরে আর আসেনি ছেলেটা। ছেলেটার সাথে দেখা হলে খুব ভালো লাগতো আমার, ছেলেটার প্রতি খুব মায়া জমে গিয়েছিল আমার। প্রতিদিন কত এমন কত সংগ্রাম নিজের জীবনে সংগ্রাম করে যাচ্ছে আমরা কতজনের খবর রাখি।

আমরা সবাই চাইলে এমন সংগ্রামরা আর কোনো দিন পথের ধারে ময়লার স্তুপে খাবার খেতে হবে না। আমরা চাইলেই সমাজটাকে পরিবর্তন করতে পারি। আমরা চাই এমন কোনো সংগ্রাম আর যেনো পথের ধারে পড়ে না থাকে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ