মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৮ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ খুলনায় হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক সার্বিক উন্নয়ন ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই: হাফিজ ফখরুল ইসলাম ফরিদপুরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণার গেট ও ব্যানার ভাঙচুর  জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: এ টি এম মাছুম জামায়াত আমিরের আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন যিনি খালেদা জিয়াসহ ৯ নারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন ২৩৭ আসনে বিএনপির ধানের শীষ পেলেন যারা নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলায় মতিউর রহমান আকন্দ নিন্দা বস্ত্রহীন ঘুমানোর হুকুম কী ?

শহরে শব্দ দূষণ : গান বাজনা হর্ণ হাঙ্গামা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

 আওয়ার ইসলাম : শব্দ দূষণ এখন জীবনবিনাশী শব্দ সন্ত্রাস। রাজধানী ঢাকাসহ দেশ জুড়েই শব্দদূষণ এক নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। এক গবেষণায় জানা গেছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ঢাকার মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ কানে কম শুনবে। আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই এর বিরুদ্ধে।

ঢাকাসহ দেশজুড়ে বিয়ে বা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানসহ নানা সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে মাইকে গান বাজানো যেন একটা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নেতার জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকী বা বিশেষ দিবসগুলোতে সারাদিন-রাত ধরে উচ্চ শব্দে মাইক বাজালেও কেউ তার প্রতিবাদ করার সাহস পান না।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের তেমন প্রয়োগ দেখা যায় না।

বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন বলেন, পরিবেশবাদীদের শত চেষ্টা এবং প্রচারণায় কোনো কাজে আসবে না, যদি না সরকারের স্বদিচ্ছা থাকে। তিনি জানান, দেশে আইন আছে, তবে এর ব্যবহার নেই। তাহলে আইন তৈরি করা কিসের জন্য?

সরকার যদি চায় অবশ্যই জনগণকে মোটিভেট করতে পারে। আমরা আন্দোলন করি, শুধু সরকারের কানে পৌঁছানোর জন্য। বিশ্বের অন্যান্য দেশে সম্ভব হলে এদেশে কেন হবে না? শুধুমাত্র উদ্যোগটা দরকার। আর এটা সরকার ছাড়া কারও পক্ষে সম্ভব না।

বেসরকারি সংস্থা ‘ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট’ সম্প্রতি ঢাকা শহরের ১০টি স্থানের শব্দ পরিমাপ করে দেখেছে। ঢাকায় নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে গড়ে প্রায় দেড় গুণ বেশি শব্দ সৃষ্টি হয়।

জরিপে দেখা গেছে, উত্তরার শাহজালাল এ্যাভিনিউতে শব্দ মাত্রা সর্বোচ্চ ৯৩ দশমিক ৫ ডেসিবেল, মিরপুর-১ এ সর্বোচ্চ ৯৬ ডেসিবেল, পল্লবীতে সর্বোচ্চ ৯১ দশমিক ৫ ডেসিবেল, ধানমণ্ডি বালক বিদ্যালয়ের সামনে সর্বোচ্চ ১০৭ দশমিক ১, ধানমণ্ডি ৫ নম্বর সড়কে সর্বোচ্চ ৯৫ দশমিক ৫, নিউমার্কেটের সামনে সর্বোচ্চ ১০৪ দশমিক ১, শাহবাগে সর্বোচ্চ ৯৭ দশমিক ৩ এবং সচিবালয়ের সামনে সর্বোচ্চ ৮৮ ডেসিবেল। অর্থাৎ ‘ঢাকা শহরের বেশিরভাগ এলাকায় এখন শব্দের সার্বক্ষণিক গড় মাত্রা ১০০ ডেসিবেল’।

এছাড়া রাজধানীর শ্যামলীতে দশ মিনিটে শব্দ দূষণ ৬শটি আর ময়মনসিংহের ব্রিজমোড় এলকায় দশ মিনিটে ১ হাজারটি শব্দ দূষণ হচ্ছে বলে সম্প্রতি এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে বলে জানান মারুফ হাসান।

ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হাসান জানান, এলাকা ভিত্তিতে বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য শব্দের মাত্রার পাঁচটি ভাগ আছে। আর সেই হিসেবে শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রা হলো ৪০ থেকে ৭০ ডেসিবেল। অথচ আমরা পরীক্ষায় দেখেছি, কোথাও কোথাও শব্দের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মাত্রার তিনগুণেরও বেশি।

তিনি বলেন, ঢাকায় সাধারণভাবে যানবাহন ও হর্নের শব্দই শব্দ দূষণের মূল কারণ। তবে এর বাইরে রাজনৈতিক, সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে মাইক বা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার আর একটি বড় কারণ। যদি আমরা ইনডোর শব্দ দূষণের দিকটি বিবেচনায় নেই তাহলে টাইলস লাগানো, মিউজিক সিস্টেমে জোরে গান বাজানো, ড্রিলিং এগুলোর শব্দ রয়েছে।

জানা গেছে, উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, আলসার, বিরক্তি সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন শিশু এবং বয়স্করা। এমনকি গর্ভে থাকা সন্তানও শব্দদূষণে ক্ষতির শিকার হয়, অর্থাৎ তাদের শ্রবণশক্তি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।

এসএস

আরো পড়ুন : বিজিবি-বিএসএফের সম্পর্ক উন্নয়নমূলক যৌথ পতাকা অবনমন


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ