বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ।। ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫


আমেরিকার মুসলিমরা অখুশি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ourislam_boxadঅনলাইন ডেস্ক: ট্রাম্প ও ক্লিন্টন তাদের নির্বাচনি প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের যে ছবি এঁকেছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা খুশি নন৷ ট্রাম্পের কাছে যারা সম্ভাব্য সন্ত্রাসী ক্লিন্টনের কাছে তারা হোমল্যান্ড সিকিউরিটির চোখ ও কান৷

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখন তার চূড়ান্ত সপ্তাহে৷ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে অ-জনপ্রিয় দুই প্রার্থী এখন তাদের প্রতিপক্ষ জিতলে সেটা যে বিশ্ব তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কত বড় বিপর্যয় হবে তা বোঝানোর চেষ্টা করছেন৷

গত সপ্তাহেও ক্লিন্টন ট্রাম্পের চেয়ে স্পষ্ট এগিয়ে ছিলেন৷ কিন্তু শুক্রবার খবর বেরোয় যে এফবিআই আবার ক্লিন্টনের ই-মেল দেখছে৷ তারপর থেকে ট্রাম্পের প্রচার অভিযান নতুন বাতাস পেয়েছে একাধিক জরিপে দেখা গেছে তিনিই এগিয়ে রয়েছেন৷

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হবার সম্ভাবনায় বিশ্বের বিশেষ করে এশিয়ার অর্থ বাজার যেন কিছুটা শঙ্কিত। ওদিকে মেক্সিকোর পেসোর বিনিময়মূল্য হ্রাস পেয়েছে৷

অর্থ ব্যবসায়ীদের চোখে ট্রাম্প সম্পূর্ণ অজ্ঞাত তিনি যে কী করবেন তা জানা নেই৷ বিশেষ করে ট্রাম্প ফেডারাল রিজার্ভের প্রধান জ্যানেট ইয়েলেন ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তির তীব্র সমালোচনা করার পর থেকে এই অবস্থাই দাঁড়িয়েছে৷

মুসলমানদের ভাবনা নির্বাচনের আগেই অ্যামেরিকার মুসলিমরা দেখছেন দু’পক্ষই তাদের একটা বিশেষ খোপে ঢুকিয়ে দিচ্ছে৷ সন্ত্রাসবাদ ছাড়া অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে মার্কিন মুসলিমদের যে কোনো উদ্বেগ বা চিন্তাভাবনা থাকতে পারে তা যেন উপেক্ষা করে যাওয়া হচ্ছে৷

প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা যেন অ্যামেরিকান মুসলিমদের সঙ্গে কথা না বলে তাদের সম্পর্কে কথা বলছেন৷ শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের মতো বিষয় যে মার্কিন মুসলিমদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ সেটা যেন ভুলে যাওয়া হচ্ছে৷

গত জুলাই মাসে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে খিজর খান ও তাঁর স্ত্রী’র ছবি৷ খিজর খান তাঁর ছেলে হুমায়ুনের কথা বলেন যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সৈনিক হিসেবে ইরাকে প্রাণ দিয়েছেন৷

খিজর খান যেসব ট্রাম্প-বিরোধী মন্তব্য করেন তার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রথম একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে এক নিহত মার্কিন সৈন্যের পরিবারের সমালোচনা করতে শোনা যায় যা কিনা প্রায় নজিরবিহীন৷

ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনি প্রচারের শুরুতেই বিরূপতার সৃষ্টি করেন এই দাবি তুলে যে সন্ত্রাসবাদবিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে বিদেশি মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা উচিত৷

সেন্ট লুইসের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে দুই প্রার্থীকে প্রশ্ন করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম-বিদ্বেষ রোধের পন্থা কি ট্রাম্প বলেন- মুসলিমরা যদি কোনো বিপজ্জনক কার্যকলাপে লিপ্ত হন তবে অন্য মুসলিমদের কর্তৃপক্ষকে সে খবর দেওয়া উচিত৷ তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এক অ্যামেরিকান মুসলিমের টুইট আজ ইতিহাসে হয়ে গেছে৷

ব্রুকলিন কলেজের অধ্যাপক মুস্তাফা বায়ুমি টুইট করেছিলেন-আমি একজন মুসলিম, আমি খবর দিতে চাই যে মিসৌরির এক প্রকাশ্য মঞ্চে এক পাগল একজন মহিলাকে ভয় দেখাচ্ছে৷ ইঙ্গিত স্পষ্টতই ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিন্টনের প্রতি৷ ডিবেট শেষ হওয়ার মধ্যে বায়ুমির টুইট ৩২,০০০ বার রিটুইট করা হয়, লাইক করা হয় ৪৩,০০০ বার৷

বায়ুমি এবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন যে মুসলিম অ্যামেরিকানদের এমন একটি বিশেষ গোষ্ঠীতে ফেলা হয়েছে যে তাদের সাধারণ মার্কিন সত্তা কোনো গুরুত্ব পাচ্ছে না৷ ওদিকে এই একটানা প্রচারণার ফলে অমুসলিম মার্কিনিরা হঠাৎ তাদের বন্ধুদের শুধু বন্ধু হিসেবে না দেখে মুসলিম বন্ধু হিসেবে দেখতে শুরু করেছেন৷

-ডিডব্লিউ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ