মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। দিন শেষে ঘুমানোর সময়েও অনেকেই ফোনটি বালিশের পাশে কিংবা বিছানায় রেখেই ঘুমান। কিন্তু এটি স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার দিক থেকে কতটা সঠিক? গবেষণা বলছে, ঘুমের সময় স্মার্টফোন খুব কাছে রাখলে এর রয়েছে একাধিক ক্ষতিকর প্রভাব।
রেডিয়েশন ঝুঁকি
স্মার্টফোন থেকে একধরনের নিম্নমাত্রার ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন (EMF) নির্গত হয়। এটি দীর্ঘসময় শরীরের কাছাকাছি থাকলে মানবদেহের কোষের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে কিছু গবেষণায় আশঙ্কা করা হয়েছে। যদিও একে এখনো নিশ্চিতভাবে ক্যান্সারের কারণ বলা হয়নি, তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এটিকে “possible carcinogen” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ঘুমের ব্যাঘাত
স্মার্টফোনের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো (blue light) মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে ঘুম আসায় বিলম্ব ঘটায়। তাই ঘুমের পূর্বে স্মার্টফোন ব্যবহার ঘুমের মান নষ্ট করে এবং দীর্ঘমেয়াদে ঘুমজনিত নানা সমস্যা ডেকে আনে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
ঘুমানোর সময়ও যদি ফোন হাতে থাকে, তাহলে কাজের ইমেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা বার্তার নোটিফিকেশন মনকে শান্ত হতে দেয় না। এতে করে মানসিক চাপ বেড়ে যায় এবং মস্তিষ্ক বিশ্রামের সুযোগ পায় না।
নিরাপদ দূরত্ব কতটা? বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুমের সময় স্মার্টফোন কমপক্ষে ৩ থেকে ৬ ফুট দূরে রাখা নিরাপদ। যদি ফোন অ্যালার্ম ঘড়ি হিসেবে ব্যবহার করেন, তাহলে এটি airplane mode চালু করে রাখা ভালো। এতে রেডিয়েশন ও নোটিফিকেশনের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে।
ঘুম শরীর ও মস্তিষ্কের পুনর্গঠনের সময়। স্মার্টফোনের ক্ষুদ্রতর আলো বা রেডিয়েশনও এ সময় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। তাই অভ্যাস করুন ফোন থেকে দূরে থাকার, অন্তত ঘুমের সময়টুকুতে। ভালো ঘুম, ভালো জীবন।
এমএইচ/