সমাজে ভিন্নমত থাকতে পারে এবং সবকিছু মিলেই গণতান্ত্রিক সমাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রবিবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারা দেশব্যাপী মামলার জামিন নিতে এডিটরদের ছুটে বেড়াতে হয়েছে। না হলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, গ্রেফতার করানো হয়েছে।
ফ্যাসিবাদী শাসনামলে মতপ্রকাশের কারণে সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের যন্ত্রণা ও আতঙ্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই যন্ত্রণা, এই নিপীড়ন, এই আতঙ্ক, এই বিভীষিকা আমরা সবাই কমবেশি অনুভব করেছি। যারা অল্প উচ্চারণে কথা বলেছে কিংবা যারা আরও জোরালো ভাষায় কথা বলেছে, প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত হয়েছে।
সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো যে বিষয়গুলো আমাদের সামনে আসছে, তা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। নিঃসন্দেহে একজন তরুণ রাজনীতিকের মৃত্যু আমাদের গভীরভাবে আঘাত করেছে।
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে এই বিএনপি নেতা বলেন, হাদির মৃত্যুর ঘটনায় আমরা তীব্রভাবে প্রতিবাদ করেছি। কারো বক্তব্য বা মতের কারণে তাকে জীবন দিতে হবে, এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
গণতান্ত্রিক সমাজে ভিন্নমতের গুরুত্ব তুলে ধরে রিজভী বলেন, ভিন্নমত থাকতে পারে। আমরাও আমাদের মতামত দেবো, একটি পত্রিকাও ভিন্ন মতপ্রকাশ করতে পারে। সেখানে নানাজন, নানা বিদগ্ধজন লিখবেন, তাদের মধ্যেও মতভিন্নতা থাকবে। সবকিছু মিলিয়েই তো একটি গণতান্ত্রিক সমাজ। কারো বক্তব্য ও মতামতের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান... সে গণমাধ্যম হোক বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, তার ওপর আক্রমণ হওয়া, বিশেষ করে এই ফ্যাসিবাদ-উত্তর সময়ে, কখনোই কাম্য হতে পারে না।
গণতন্ত্র ও অধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে ১৯৫২ সাল থেকে যত লড়াই হয়েছে, সবই ছিল অধিকারের প্রশ্নে। আর সেই অধিকারের মূল বিষয়টি হচ্ছে গণতন্ত্র।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পরিস্থিতি আবারও অনেকটা সেই দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
শেষে গণতান্ত্রিকচর্চা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক সমাজে ফিরে আসতে হবে, যেখানে প্রত্যেকের কথা বলার অধিকার থাকবে এবং প্রত্যেকে তার মতপ্রকাশ করতে পারবে।
তিনি বলেন, বিএনপির অঙ্গীকার হলো সামনের দিনে একটি সুস্থ, গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলা।
আরএইচ/