বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ২ পৌষ ১৪৩২ ।। ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :

বিজয় দিবসে খুলনা নগরীতে ইসলামী আন্দোলনের বিজয় র‍্যালি ও সমাবেশ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নগরীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের উদ্যোগে বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় নগরীর পাওয়ার হাউজ মোড়ে র‍্যালি-পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সভাপতি ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব মুফতী আমানুল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন মহানগর সেক্রেটারি মুফতী ইমরান হোসাইন।

সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব মুফতী আমানুল্লাহ বলেন, স্বাধীনতার ৫৫তম দিবসেও জাতি জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে—এ অবস্থাকে স্বাধীনতা বলা যায় না। একাত্তরের প্রসঙ্গ এলেই কে কী করেছেন, তার আলোচনা বেশি হয়; কিন্তু কেন মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, সেই বিষয়টি উপেক্ষিত থাকে। একাত্তরসহ বাংলার দীর্ঘ সংগ্রামে যারা অংশ নিয়েছেন ও জীবন দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমরা গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং ভবিষ্যতেও জানাতে থাকব। তবে তাদের আত্মত্যাগের উদ্দেশ্য আলোচনা না করলে সেই ত্যাগের যথার্থ মূল্যায়ন হয় না।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুযায়ী একাত্তরে মানুষ যুদ্ধ করেছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। আর একাত্তরের পূর্ববর্তী ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিল মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্যগুলোর আলোকে বিবেচনা করলে বলা যায়—আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো কাঙ্ক্ষিত অর্থে সফল হয়নি। আমরা আলাদা ভূখণ্ড ও পতাকা পেয়েছি, কিন্তু এগুলো স্বাধীনতার প্রতীক মাত্র। প্রকৃত স্বাধীনতা হলো—আয়, সুযোগ, সম্মান ও মর্যাদার বৈষম্য দূর হওয়া; যা বাংলাদেশে এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

তিনি বলেন, প্রকৃত স্বাধীনতা মানে মানুষের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধ হওয়া, খুন-গুম ও বিনাবিচারে আটক বা হত্যা বন্ধ হওয়া, সুবিচার নিশ্চিত হওয়া এবং খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তাসহ মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা পাওয়া। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতি এসব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একাত্তরের বিজয়কে অর্থবহ করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে—ইনশাআল্লাহ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আমাদের সামনে নতুন একটি সুযোগ তৈরি করেছে। ৫৪ বছরের জমে থাকা জঞ্জাল দূর করে দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরকার গঠনের সুযোগ পেলে সমাজ থেকে আয়, সুযোগ ও সম্মানের বৈষম্য দূর করা হবে। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। খুন-গুম, নির্যাতন ও বিনাবিচারে হত্যার সংস্কৃতি বন্ধ করা হবে। সমাজে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি হবে শালীন ও সৌজন্যতামূলক।

র‍্যালি-পূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আবু তাহের, জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা দ্বীন ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মো. ইমরান হোসেন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক গাজী ফেরদাউস সুমন, কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল কাশেম, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মোল্লা রবিউল ইসলাম তুষার, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাও. নাসিম উদ্দিন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মারুফ হোসেনসহ মহানগর নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিজয় র‍্যালি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ