বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী বৈঠক শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ এবং পরিচালনা করেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।
সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের অধিকার আদায়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৫ দফা দাবি আদায়ে চলমান কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক থেকে সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণা দেওয়া হয়—সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জুলাই সনদ জাতির মুক্তির সনদ। এটি উপেক্ষা করা হলে জাতীয় জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।
কেন্দ্রীয় বৈঠকে জানানো হয়, সংগঠনের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে একযোগে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই সনদ কেবল রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র নয়; বরং এটি হতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ইসলামি মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার সুস্পষ্ট রূপরেখা।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা, থানা-মহল্লা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করা হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শেষ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে।
এছাড়া বৈঠকে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান সফরত আমিরে মজলিস মাওলানা মামুনুল হকের সফর নিয়েও আলোচনা হয়। নেতৃবৃন্দ সময়োপযোগী এই সফরকে স্বাগত জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন—বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের জনগণের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা-খাতে দুই দেশের সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে এবং উভয় দেশই এতে উপকৃত হবে। তারা আরও আশা প্রকাশ করেন, সরকারও এ সফরের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, আমিরে মজলিস মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বে আগামী দিনের কর্মপন্থা আরও শক্তিশালী করা হবে। একইসঙ্গে সব নেতাকর্মীকে আসন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাচ–গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে বৈঠকে শিশুদের নৈতিক ও চারিত্রিক বিকাশের স্বার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি উত্থাপন করা হয়।
সভায় বলা হয়, ইসলাম, দেশ ও জনগণের কল্যাণে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
বৈঠকে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- অভিভাবক পরিষদের সদস্য মাওলানা আকরাম আলী, নায়েবে আমীর মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মুফতী সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী।
যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মুফতী শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী। সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মুফতি উজায়ের আমীন, মাওলানা মুহসিনুল হাসান। প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান, আইন বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শরীফ হোসাইন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক ক্বারী হোসাইন আহমদ, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জসিম উদ্দিন।
এছাড়া নির্বাহী সদস্য মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা সাব্বির আহমদ উসমানী, মাওলানা আব্দুল মুমিন, মাওলানা লিয়াকত হোসাইন, মাওলানা আমজাদ হুসাইন, মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার, মুফতি আজিজুল হক, মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ, মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমেনী, মাওলানা রাকিবুল ইসলাম, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী, মাওলানা মুর্শিদুল আলম সিদ্দীক ও জাহিদুজ্জামান প্রমুখ।
এমএইচ/