শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭


বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারে পাকিস্তানের প্রস্তাব 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সহজ করতে বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ মনে করছে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা করাচি পোর্ট ট্রাস্ট (কেপিটি) পরিচালিত বন্দর ব্যবহার করলে বিকল্প সমুদ্র রুট খুলে যাবে এবং আঞ্চলিক সংযোগ ব্যাবস্থা আরও জোরদার হবে।

আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) নবম বৈঠকে এ প্রস্তাবটি আলোচনায় আসবে। প্রায় দুই দশক পর এই কমিশনের বৈঠক হতে যাচ্ছে। সর্বশেষ ২০০৫ সালে হয়েছিল।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, সরাসরি সামুদ্রিক বাণিজ্য জোরদারে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) ও পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশনের (পিএনএসসি) মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এই চুক্তি হলে চট্টগ্রাম ও করাচির মধ্যে নিয়মিত জাহাজ চলাচল সম্ভব হবে এবং তৃতীয় দেশের বন্দরের ওপর নির্ভরতা কমবে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রামে পাঁচ দশক পর প্রথম সরাসরি কার্গো জাহাজ পৌঁছায়। এরপর থেকেই পাকিস্তান সামুদ্রিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহ দেখায় এবং একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব দেয়।

ইআরডি জানিয়েছে, এবারের বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, হালাল পণ্য মান নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং খাতে প্রশিক্ষণ, চিনি শিল্পে কারিগরি সহায়তা, গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন, টিকা উৎপাদন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা খাতে সহযোগিতার মতো একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
পাকিস্তান হালাল কর্তৃপক্ষ (পিএইচএ) ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মধ্যে একটি এমওইউ সইয়ের বিষয়ও বিবেচনায় আছে।

এছাড়া পাকিস্তান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০ নতুন বৃত্তি, একটি পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপন এবং নিরাপত্তা সামগ্রী মুদ্রণের কাগজ ও কালি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হয়েছে ৬৬১ মিলিয়ন ডলার, আর বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে রপ্তানি মাত্র ৫৭ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ থেকে মূলত পাট, তৈরি পোশাক, সিরামিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রপ্তানি হয়; পাকিস্তান থেকে আসে তুলা, সুতা, রাসায়নিক দ্রব্য, ওষুধ ও লোহা-ইস্পাতজাত সামগ্রী।

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘করাচি বন্দর ব্যবহার করে সরাসরি রপ্তানি চালু হলে বাংলাদেশের জন্য নতুন বাজার উন্মুক্ত হবে। তৈরি পোশাক, চামড়া, কৃষিপণ্য ও আইটি সেবার রপ্তানিতে বড় সুযোগ তৈরি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিসা ও বিমান সংযোগ পুনরায় চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে পর্যটন ও ব্যবসায়িক সম্পর্কও জোরদার হচ্ছে।’

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ