রবিউল আওয়াল মাসের পবিত্রতা ও মহিমাকে সামনে রেখে আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলা-২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন করা হবে। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত ডক্টর উমর ফাহমী। এছাড়াও মেলায় অংশগ্রহণকারী বিদেশি প্রকাশক প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন লেবাননের দার ইবনে হাযম-এর আহমাদ কুসাইবাতি, দারুল কুতুব আল ইলমিয়া-এর জিহাদ বাইদুন, মুয়াচ্ছাছা রিসালা আলামিয়া-এর হিসাম আব্দুর রাহিম এবং মিশরের ইবদা ও ইবনুল জাওযি-এর আহমাদ হিশাম।
এবারের বইমেলায় দেশি-বিদেশি মিলিয়ে শতাধিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। স্বচ্ছ ও নিয়মমাফিক প্রক্রিয়ায় মোট ১৪০টি স্টল (সিঙ্গেল ও ডাবল) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রথমবারের মতো মেলার পরিসর বায়তুল মোকাররমের পূর্ব গেট থেকে দৈনিক বাংলার মেইন রোড পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে, যা মেলাকে করেছে আরও সুপরিকল্পিত ও দর্শনার্থীবান্ধব।
মেলায় রয়েছে বিশেষ আয়োজন—মনোরম শিশুচত্বর, মিডিয়া কর্নার, মহিলাদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা, লিটল ম্যাগাজিন কর্নার, লেখক কর্নার, চা-কফি ও ফুড কর্নার এবং একটি সুসজ্জিত ইনফরমেশন সেন্টার। এছাড়াও প্রতিদিন মেলার বিশাল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, আলোচনা সভা, লেখক-পাঠক সাক্ষাৎ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশে ইসলামি বইমেলার সূচনা হয় নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে। বর্তমানে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামি গ্রন্থমেলা হিসেবে স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলা-২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক আয়োজন, যেখানে পাকিস্তান, মিশর ও লেবাননসহ বিভিন্ন দেশের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
মেলা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো—সঠিক ইসলামি জ্ঞান, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রচার-প্রসার, তরুণ প্রজন্মের মাঝে জ্ঞানচর্চার সঠিক ধারা তুলে ধরা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং পাঠক-লেখক-প্রকাশকের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি করা।
এছাড়া, মেলাকে কেন্দ্র করে বায়তুল মোকাররমের পূর্ব গেটের রাস্তাটি সংস্কার ও সুরক্ষিত করা হয়েছে, যা আগে অবৈধ দখল ও অসামাজিক কার্যকলাপ-এর আড্ডাখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন এটি একটি সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও জ্ঞানচর্চার উপযোগী স্থানে পরিণত হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, মেলা কেবল বই কেনা-বেচার স্থান নয়, বরং এটি একটি সমন্বিত বুদ্ধিবৃত্তিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানচর্চার মহাযজ্ঞ। সকল বইপ্রেমী, জ্ঞানান্বেষী এবং ইসলামি সংস্কৃতি-অনুরাগী মানুষকে এই মেলায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এসএকে/