গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী নেতা প্রয়াত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) তিনি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় উপস্থিত হয়ে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানিয়েছেন, সুখরঞ্জন বালি চিফ প্রসিকিউটর অফিসে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, তাকে অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে এবং দীর্ঘদিন ভারতের কারাগারে আটক থাকতে হয়েছে।
সুখরঞ্জন বালির আইনজীবী জানান, ২০১২ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলা চলাকালে তাকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পিরোজপুর থেকে ঢাকায় আনা হয়। তখন তাকে নানাভাবে চাপ দেওয়া হয় এবং হুমকি দেওয়া হয় মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে জানান, তার ভাই বিশাবালীর (বিশেশ্বর বালী) হত্যাকাণ্ডে সাঈদী জড়িত ছিলেন না; তাকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করেছিল।
অভিযোগে বলা হয়, তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন তাকে সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করতে শারীরিক নির্যাতন করেন। এ সময় অন্যান্য কর্মকর্তারাও চাপ সৃষ্টি করেন এবং সাক্ষ্য না দিলে হত্যার হুমকি দেন।
বালি জানান, ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর তিনি ঢাকায় এসে সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন এবং পরদিন আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের প্রাঙ্গণ থেকেই সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় তিন মাস আটক রাখার পর তাকে সীমান্তে হস্তান্তর করা হয়। পরে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে পশ্চিমবঙ্গের বশিরহাট কারাগারে দীর্ঘ পাঁচ বছর বন্দি করে রাখে।
অভিযোগে সুখরঞ্জন বালি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাকে অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিনি মনে করেন, এ ঘটনায় আইনি প্রতিকার পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। এজন্য তিনি পূর্ণ বিবরণসহ লিখিত অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছেন।
এসএকে/