মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আজ সোমবার পর্যন্ত মোট ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে।
আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আগামী বুধবার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন। এর আগে চার কার্যদিবসে নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়।
মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম। উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য প্রসিকিউটররাও। পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন শুনানিতে অংশ নেন। গ্রেফতার ও ট্রাইব্যুনালে হাজির থাকা আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন যায়েদ বিন আমজাদ।
গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মামলাটিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। প্রসিকিউশনের দাখিল করা অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি পৃথক অভিযোগ আনা হয় তিন আসামির বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের ১ জুন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র ও সাধারণ জনতার গণঅভ্যুত্থান দমন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও প্রশাসনের একটি অংশ মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটিত করে।
মামলায় গ্রেফতার সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্য উদঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হতে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে।
পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির করতে গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল বাংলা ও ইংরেজি দুইটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়। পরদিন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তবে সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করায় তাদের অনুপস্থিতিতেই রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
এই মামলার বাইরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা চলমান রয়েছে—একটি গুম-খুনের অভিযোগে এবং অন্যটি ২০১৩ সালের মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে।
গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হলে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা প্রথম মামলাটি হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই। এর পর থেকে আরও বেশ কয়েকটি মামলার তদন্ত ও বিচার চলছে।
এমএইচ/