আন্তর্জাতিক ইসলামি সেবা সংস্থা রাবেতাতুল আলমিল ইসলামির (বিশ্ব মুসলিম লিগ) সাবেক মহাসচিব ড. আবদুল্লাহ ওমর নাসিফ মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। তিনি ছিলেন সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিলের সাবেক উপপ্রধান। এছাড়া তিনি একজন রসায়নবিদ ও ভূতাত্ত্বিক হিসেবেও পরিচিত। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি শিক্ষা, গবেষণা, দাওয়াত ও দেশসেবায় অনন্য অবদান রেখে গেছেন।
সৌদি গণমাধ্যমের সংবাদমাধ্যম ওকাজ ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে তিনি পরলোক গমন করেন। বাদ আসর জেদ্দার জাফালি মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং আল-আসদ কবরস্থানে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে।
মরহুম ১৯৩৯ সালে জেদ্দা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ভূতত্ত্বে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গমন করে নিজের বিষয়ের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর দেশে ফিরে আসেন একজন সম্মানিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও ভূবিজ্ঞানের খ্যাতনামা গবেষক হিসেবে।
ড. নাসিফ ধাপে ধাপে একাডেমিক জীবনে উন্নতি করে কিং আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে অধিষ্ঠিত হন। তাঁর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মসূচি ও গবেষণা বিভাগসমূহে ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে। পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও সমাজের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করতে বহু বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিনির্ভর উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
ড. নাসিফ ছিলেন রাবেতাতুল আলমিল ইসলামি (বিশ্ব মুসলিম লীগ)-এর মহাসচিব ছিলেন, যেখানে তিনি ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বের নানা ফোরামে সৌদি আরবকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
তিনি শুরা কাউন্সিলের উপপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ছিলেন প্রজ্ঞা, দূরদৃষ্টি ও জাতীয় স্বার্থে নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব।
তিনি বিপুল বৈজ্ঞানিক ও চিন্তাধারাগত উত্তরাধিকার রেখে গেছেন—বহু গ্রন্থ, প্রবন্ধ, বক্তৃতা ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ তাঁর কর্মজীবনকে সমৃদ্ধ করেছে।
মধ্যপন্থী ও ভারসাম্যপূর্ণ দাওয়াতি দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তিনি বিশ্ব ইসলামি অঙ্গনে ব্যাপক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন। অসংখ্য শিক্ষাবিদ ও গণ্যমান্য ব্যক্তি তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, তিনি শিক্ষা ও মানবসেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং তাঁর মৃত্যু দেশ ও মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বড় ক্ষতি।
এলএইস/