শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ ।। ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি দিতে হবে: ড. আহমদ আবদুল কাদের শ্রমিক মজলিসের সেমিনার অনুষ্ঠিত কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণার দাবি মুরাদনগর উপজেলা জমিয়তের নামাজ চলাকালীন গান-বাজনার মাধ্যমে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে: মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী  পিআরসহ ৫ দফা দাবীতে ঢাকাসহ সকল বিভাগীয় শহরে গণমিছিল পিআর পদ্ধতিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে: পীর সাহেব চরমোনাই ‘পিআর পদ্ধতির নির্বাচন আদায়ে শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করবে ইসলামী আন্দোলন’ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নির্বাচনী তফসিলের পূর্বেই গণভোট দিতে হবে: নেজামে ইসলাম পার্টি লালবাগ কেল্লায় বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে গ্রুপ মেডিটেশন ও ইয়োগা অনুষ্ঠান ইসরায়েলি সেনারা সরছে, নিজ ভূমিতে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা

ধর্ম অবমাননার শাস্তি: কারাদণ্ড নয়, কোরআনের সূরা মুখস্থের আইন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশ্বে যখন ধর্মীয় সহনশীলতার ঘাটতি ও মতভেদ বাড়ছে, তখন ২০১৮ সালে লেবানন আদালতের একটি ব্যতিক্রমী রায় বিশ্বজুড়ে নজির স্থাপন করেছিল। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তিন মুসলিম তরুণকে কারাবন্দি বা জরিমানার বদলে শাস্তি হিসেবে পবিত্র কোরআনের একটি সূরা মুখস্থ করার নির্দেশ দেন এক বিচারক।

ঘটনাটি ঘটেছিল লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ত্রিপোলিতে। অভিযোগ ছিল, ওই তিন তরুণ খ্রিস্টান ধর্মের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব—হজরত ঈসা (আ.)-এর মা হজরত মরিয়ম (আ.)-এর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর হলে, বিচারক জোসেলিন মাত্তা এক অভিনব রায় দেন।

তিনি ঐ তরুণদের শাস্তি হিসেবে কোরআনের সূরা আলে ইমরান মুখস্থ করার নির্দেশ দেন—যেখানে হজরত মরিয়ম (আ.) এবং হজরত ঈসা (আ.)-এর সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।

বিচারক মাত্তা তাঁর রায়ের ব্যাখ্যায় বলেন: “আইন মানে কেবল কারাগার নয়, এটি একটি শিক্ষারও মাধ্যম। এই রায়ের মাধ্যমে আমি চেয়েছি তরুণদের ইসলামের সহনশীলতা ও আন্তধর্মীয় শ্রদ্ধাবোধের শিক্ষা দিতে।”

এই মানবিক ও শিক্ষামূলক রায় তখন প্রশংসা কুড়িয়েছিল বিভিন্ন মহলে। লেবাননের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি এক টুইট বার্তায় মন্তব্য করেছিলেন: “এই রায় ন্যায়বিচারের এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যা ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মের মধ্যে বিদ্যমান পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়।”

দেশটির দুর্নীতিবিরোধী প্রতিমন্ত্রী নিকোলাস তুয়েনি-ও রায়টির প্রশংসা করে বলেন, এটি ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা রোধে ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুসরণযোগ্য মডেল।

ইসলাম ধর্মেও অন্যান্য ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে: “আল্লাহকে ছেড়ে তারা যাকে ডাকে, তাদের তোমরা গালি দিয়ো না, কেননা তারা সীমা লঙ্ঘন করে অজ্ঞানতাবশত আল্লাহকেও গালি দেবে।” (সূরা আন’আম: ১০৮)

এই আয়াত আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ধর্মীয় সহনশীলতা কেবল সামাজিক শান্তির জন্যই নয়, বরং ঈমানদারেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

২০১৮ সালের লেবাননের এই ঘটনা আমাদের শেখায়—শাস্তি শুধু শাস্তি নয়, এটি হতে পারে শিক্ষা, সহানুভূতি এবং সচেতনতা তৈরির একটি মাধ্যম।

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ