বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৬ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কারাগারে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থী  ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার আসছে ফাজিল পরীক্ষায় অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা হুঁশিয়ারি ইআবির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তরুণ কলাম লেখক ফোরামের নেতৃত্বে মোফাজ্জল–সামিন শুক্রবার ইসলামী আন্দোলনের আন্তর্জাতিক সিরাত কনফারেন্স, সফল করার আহ্বান ভোলায় শিবির নেতার উপর হামলা, অবস্থা আশঙ্কাজনক রাহমাহ ফাউন্ডেশনের শিক্ষা-উপকরণ বিতরণ নতুন এয়ালাইন্সের ফ্লাইট চালু, কম খরচে সৌদি যাতায়াতের সুযোগ এনসিপিকে জুলাই সনদে সাক্ষরের আহ্বান করেছে সরকার সাম্প্রদায়িক ধর্ষণ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

সাইয়েদুল ইস্তেগফার : যে আমলে গুনাহ মাফ হয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আল্লাহ তায়ালার একটি গুণবাচক নাম হলো গাফুর বা ক্ষমাশীল। তিনি বান্দাকে গুনাহের শাস্তি তৎক্ষণাৎ দিতে সক্ষম হওয়ার পরও অবকাশ দিয়ে থাকেন, ক্ষমা চাইলে ক্ষমা করেন এবং তাওবাকারীর তাওবা কবুল করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী ও ক্ষমাশীল।’ (সুরা নিসা: ৪৩)

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা জুমার: ৫৩)

যে আমলের কারণে আল্লাহ তাআলা ছোট-বড় সবরকম গুনাহ ক্ষমা করে দেন সেটি হলো আন্তরিক তাওবা। বান্দা যখন নিজের অপরাধ বুঝতে পেরে সত্যিকার তাওবা করে তখন আল্লাহ শুধু তার গুনাহই ক্ষমা করেন না; বরং গুনাহকে নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দেন। সুবহানাল্লাহ!

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘কিন্তু যারা তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহগুলোকে নেকি দিয়ে পরিবর্তন করে দেবেন।’ (সুরা ফুরকান: ৭০)

কৃত গুনাহের ওপর অনুতপ্ত হয়ে গুনাহ পুনরায় না করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করাই প্রকৃত তাওবা। এর জন্য দুই রাকাত নামাজ তাওবার নিয়তে পড়া উত্তম। যদিও তাওবার জন্য নামাজ পড়া শর্ত নয়। তবে বান্দার হক নষ্ট হয়ে থাকলে তা আদায় করা তাওবার পূর্বশর্ত। (তিরমিজি: ৪০২, আল মিনহাজ ফি শরহি মুসলিম: ১৭/৫৭, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ২/২৩৯-২৪০)

নামাজ শেষে আল্লাহর তাসবিহ পড়বে, আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং ইস্তেগফার পড়ে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবে। এরপর ইস্তেগফারের যেকোনো দোয়া পাঠ করবে। সম্ভব হলে সাইয়্যিদুল ইস্তেগফার পড়া উত্তম। কারণ, তওবার শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো, সাইয়্যিদুল ইস্তেগফার।

সাইয়েদুল ইস্তেগফার হলো—

 اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা আনতা রব্বি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খলাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা, ওয়া ওয়াদিক মাসতাতাতু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু, আবু-উ লাকা বিনি মাতিকা আলাইয়া ওয়া আবু-উ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা। ’

অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার বান্দা। আমি যথাসাধ্য আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকব। আমি আমার নিকৃষ্ট আমল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই, আপনার যে অসংখ্য নিয়ামত ভোগ করছি এ জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। আমি আমার কৃত অপরাধ স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই। (আবু দাউদ: ৫০৭০)

প্রিয়নবী সা. ইরশাদ করেছেন ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) করবে, আল্লাহ তাকে প্রত্যেক বিপদ হতে মুক্তির ব্যবস্থা করবেন, সকল দুশ্চিন্তা হতে মুক্ত করবেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫১৮)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মন্দ কাজ করে ফেলে বা নিজের প্রতি জুলুম করে বসে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, সে অবশ্যই আল্লাহকে অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালুই পাবে।’ (সুরা নিসা: ১১০)

উল্লেখ্য, উল্লেখিত দোয়াটি কারো মুখস্থ করা সম্ভব না হলে সে নিজের ভাষায়ও মহান আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে তওবা করতে পারবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিন। আমিন।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ