মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৪ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
আবারও ‍খুলে দেওয়া হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত স্বাধীন দেশে থেকেও আমরা ছিলাম পরাধীন: ফয়জুল করীম নোয়াখালীতে কোরআন তালিমে হামলার প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল ইসরায়েলকে কঠিন পরিণতির হুঁশিয়ারি ইয়েমেনের  সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মানী/ভাতা পুনঃনির্ধারণ: অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন এবার এক টাকা কেজি গরুর গোশত বিক্রির ঘোষণা এমপি প্রার্থীর! ‘দায়সারা গোছের তামাশার নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না’ নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজন করার উদ্যোগ নিন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল শায়খ আহমাদুল্লাহর আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও তরুণ প্রজন্মের দিকভ্রান্তি

নবীজী সা. যেভাবে পানি পান করতে বলেছেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মাওলানা নূর আলম ||

রাসুলুল্লাহ সা. পানি পান করার সময় কিছু নিয়ম অনুসরণ করতেন, যা উম্মতের জন্য পালনীয়। এতে একদিকে যেমন রসুলুল্লাহ সা.-এর অনুসরণ হবে, তেমনি মহান আল্লাহর নেয়ামতের যথাযথ হক আদায় হবে।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ? তোমরাই কি তা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছে করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? (সুরা ওয়াকেয়া: ৬৮-৭০)

বিশুদ্ধ, পরিমিত ও নিয়ম মেনে পানি পানে অনেক রোগের উপকার পাওয়া যায়। তবে অনেকেই সঠিকভাবে পানি পান করেন না বা জানেন না। পানি কীভাবে পান করতে হবে— এ ব্যাপারেও বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা.-এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে; যা পালন করলে পানি পান করার পাশাপাশি বিরাট সওয়াবের মালিকও হওয়া যাবে। রাসুল  সা.- এর বাস্তব জীবনের এ আমলগুলো উঠে এসেছে হাদিসের বর্ণনায়।

পানি পান করার কয়েকটি সুন্নত হলো-

১. বিসমিল্লাহ পাঠ করা: রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, যখন তোমরা পান করো, তখন শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং শেষে আল-হামদুলিল্লাহ পাঠ করবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৮৫)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সা. মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে বারণ করেছেন। (রিয়াজুস সালেহিন, হাদিস : ৭৬৭)

২. পানির পাত্র ব্যবহার করা: রাসুলুল্লাহ সা. পানির উৎস মুখ ডুবিয়ে পানি পান করার পরিবর্তে পানি পাত্রে নিয়ে পান করতে বলেছেন।

কেননা পানির উৎস মুখ ডুবিয়ে দিলে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যেন কুকুরের মতো পানিতে মুখ দিয়ে পান না করে, এক হাতেও যেন পানি পান না করে। যেমন একদল করে থাকে।

যাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৪৩১)

৩. পরিষ্কার পাত্রে পান করা: রাসুলুল্লাহ সা. পানির পাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাতের বেলা পানপাত্র আন্দোলিত না করে (পরিষ্কার না করে) যেন পানি পান না করে।তবে পাত্র ঢাকা অবস্থায় থাকলে ভিন্ন কথা। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৪৩১)

৪. সবসময় ডান হাতে পান করা: মহানবী সা. বলেন, তোমরা বাম হাতে আহার কোরো না। কেননা শয়তান বাম হাতে আহার করে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩২৬৮)

৫. সবসময় বসে পানি পান করা: নবীজি সা. দাঁড়ানো, হাঁটা বা শোয়া অবস্থায় পানি পান না করে বসে বসে পানি পান করার নির্দেশ দিয়েছেন।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলেন, দাঁড়িয়ে, হেঁটে বা শুয়ে পানি পান করলে শ্বাসনালিতে পানি ঢুকে যাওয়ার ভয় থাকে।

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. দাঁড়িয়ে পানি পান করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০২৪)

৬. তিন শ্বাসে পান করা: রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা এক চুমুকে উটের মতো পানি পান কোরো না; বরং দুই-তিনবার (শ্বাস নিয়ে) পান কোরো। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৮৫)

৭. গ্লাসে নিঃশ্বাস না ফেলা: নবীজি সা. বলেন, তোমরা (পান করার সময়) পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলো না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫৪)

৮. পান শেষে আলহামদুলিল্লাহ: রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, যখন তোমরা পান করো, তখন শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৮৫)

আল্লাহ তায়ালা সবাইকে নিত্যদিনের প্রত্যেকটি কাজে রাসুলুল্লাহ সা. এর সুন্নাহ সমুহ অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুক।

টিএ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ