বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ২ পৌষ ১৪৩২ ।। ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
মনোনয়ন না পেয়ে এবি পার্টিতে যোগ দিলেন জমিয়ত একাংশের নেতা বিজয় দিবসে খুলনা নগরীতে ইসলামী আন্দোলনের বিজয় র‍্যালি ও সমাবেশ বিজয় দিবসে বিভিন্ন উপজেলায় ইসলামী আন্দোলনের আলোচনা সভা ও র‍্যালি শান্তিতে নোবেল: মনোনয়ন পেলেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি ও গাজার চিকিৎসকেরা বাংলাদেশ চলবে নতুন ব্যবস্থার রাজনীতিতে: জামায়াত আমির শীতে গাজায় নবজাতকের মৃত্যু, ত্রাণ বাধায় মানবিক সংকট আরও গভীর শীতে এক কাপ তুলসি চা আপনার যেসব উপকার করবে একাত্তরে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, তবে তা অর্থবহ হয়নি: চরমোনাই পীর ফিলিস্তিনিসহ ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ফরিদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশর এক বিশাল বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিত 

উত্তর প্রদেশ সরকারের মাদরাসা স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপ, মুসলিম সমাজে উদ্বেগ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ শোয়াইব

ভারতে যে কয়টি রাজ্য মুসলিম বিদ্ধেষের জন্য খুব বেশি পরিচিত সেগুলোর মধ্যে উত্তর প্রদেশ অন্যতম। উত্তর প্রদেশে প্রায়ই মুসলিমদেরকে ভিকটিম হতে দেখা যায়। উত্তর প্রদেশ সরকারের সাম্প্রতিক মাদরাসাবিরোধী পদক্ষেপ মুসলিম সমাজের মধ্যে নতুন করে ভয় ও হতাশা তৈরি করেছে। মুসলিমদের অভিযোগ, বিজেপি-শাসিত রাজ্যটি ধীরে ধীরে সংখ্যালঘু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্বায়ত্তশাসন ধ্বংস করে দিচ্ছে।

ভারতীয় মিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরে মাদ্রাসা বন্ধ, বুলডোজার দিয়ে ভবন ভাঙাসহ নানা অভিযানের পর এবার উত্তর প্রদেশ সরকার সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে। রাজ্যের সংখ্যালঘু কল্যাণমন্ত্রী ও. পি. রাজভার সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, ভবিষ্যতে শিক্ষক নিয়োগ একটি রাজ্য-স্তরের কমিশনের মাধ্যমে করা হবে, ফলে মাদরাসা পরিচালনা কমিটিগুলোকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হবে।

বর্তমানে মাদ্রাসা বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব মাদরাসা পরিচালনা কমিটির হাতে রয়েছে, যা ভারতের সংবিধানের ২৮–৩০ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত সংখ্যালঘু অধিকার সুরক্ষিত করে। সমালোচকদের মতে, নতুন এই সিদ্ধান্ত সরাসরি সেই সাংবিধানিক সুরক্ষাকে দুর্বল করছে।

রাজভারের ঘোষণার দুই দিনের মধ্যেই সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের পরিচালক এবং মাদ্রাসা বোর্ডের রেজিস্ট্রার একটি সার্কুলার জারি করে জেলা সংখ্যালঘু কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন—তিন দিনের মধ্যে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত মাদরাসাগুলোর সব শিক্ষকের বিস্তারিত তালিকা জমা দিতে হবে। পাশাপাশি পরিচালনা কমিটিগুলোকে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে যে, আগের নিয়োগগুলো ২০১৬ সালের বিধিমালা অনুযায়ী হয়েছে এবং তাতে স্বজনপ্রীতি ছিল না।

মাদ্রাসা পরিচালকদের এবং মুসলিম সমাজের নেতারা এসব অনিয়মের অভিযোগকে অতিরঞ্জিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা সতর্ক করে বলেছেন, এটি বৃহত্তর হস্তক্ষেপের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত। লখনউয়ের একজন জ্যেষ্ঠ মাদ্রাসা প্রশাসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,

“প্রথমে অনিবন্ধিত মাদ্রাসা বন্ধ করা হলো, এরপর বুলডোজার অভিযান, আর এখন শিক্ষক নিয়োগ। এগুলো প্রশাসনিক সংস্কার নয়, বরং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ধাপ।”

এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হলে প্রায় ৫৬০টি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত মাদ্রাসা এবং প্রায় ৮,৪০০ শিক্ষক সরাসরি প্রভাবিত হবেন, যা হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে। মুসলিম সংগঠনগুলো এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে সংবিধান-প্রদত্ত অধিকারগুলোর ওপর সরাসরি আঘাত বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে—সরকারের উদ্দেশ্য সংস্কার নয়, বরং নিয়ন্ত্রণ।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ