বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
জামিয়া গহরপুরে শিক্ষকতার পাঁচ দশক পূর্তিতে দুই শিক্ষকের সম্মাননা বৃহস্পতিবার পুঁজিবাদের বিপরীতে ইসলাম নারীর প্রতি পরিপূর্ণ সম্মানের কথা বলে: খামেনি বন্দরে কর্কশিট কারখানায় আগুন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা নবাগত ইউএনওর সঙ্গে হাতপাখার প্রার্থী সাকীর শুভেচ্ছা বিনিময় প্রাথমিকে শাটডাউন, শিক্ষকদের ছাড়াই পরীক্ষা দিলো শিশুরা সার্টিফিকেটের স্বীকৃতি: কওমি মুরব্বিদের প্রতি একটি নিবেদন বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস: শীতকালে প্রতিবন্ধীদের চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের দিকনির্দেশনা নবাবগঞ্জে আগুনে পুড়েছে ১১ বাড়ি, নিহত ১

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

একে অপরের হাতে হাত রেখে হাঁটছেন দম্পতিরা। কনেরা পরেছেন লাল ফিতায় সজ্জিত ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি সাদা ও লাল পোশাক। বরদের পরনে কালো স্যুট এবং টাই। পাশাপাশি হাঁটলেও তাদের এই বিয়ের পটভূমি বলছিল অন্য গল্প—জীর্ণ ভবন, কংক্রিটের স্তূপ আর ধ্বংসাবশেষ; যা গাজা উপত্যকার দুই বছরের সংঘাতের ক্ষতচিহ্ন।

গতকাল মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণের খান ইউনিসে ৫৪ দম্পতি এক গণবিবাহ অনুষ্ঠানে একসূত্রে বাঁধা পড়েছে। যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের মাঝেই জীবনের এক সাহসী উদযাপন বলা যায় এই আয়োজনকে।

কারাম মুসায়েদ নামের এক বর বলেন, ‌‌‘‘আমাদের এমন একটি সুখের মুহূর্ত দরকার ছিল; যা আমাদের হৃদয়কে আবারও জীবন্ত করে তুলতে পারে।’’ ধ্বংসস্তূপে বিছানো লাল কার্পেটের ওপর ঢাক-ঢোলের তালে তালে দম্পতিরা এগিয়ে গিয়ে উঠছিলেন অস্থায়ী মঞ্চে।

কনে হাতে ধরেছিলেন লাল, সাদা ও সবুজ রঙের ফিলিস্তিনি পতাকা আর সাজানো ফুলের তোড়া। বররা পাশে হাঁটছিলেন ছোট ছোট পতাকা হাতে। ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত আর নাচে-বাজনায় সাজানো এই গণবিবাহের আয়োজন শহরের এক স্কয়ারে শত শত দর্শকের হৃদয় কেড়েছে।

অনেকে চত্বরে দাঁড়িয়েছিলেন। কেউ আবার ঝুঁকি নিয়ে পাশের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের ওপর উঠে অনুষ্ঠান দেখছিলেন। দু’বছর যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর নবদম্পতিরা জানিয়ে দিলেন সতর্ক আশাবাদ।

মুসায়েদ বলেন, ‘‘আমাদের আজকের অনুভূতিটা অনেক সুন্দর। এত ভোগান্তির পর আমরা সত্যিই এই আনন্দের প্রাপ্য ছিলাম। কঠিন জীবন আর যে ক্ষুধা সহ্য করেছি, বন্ধু-স্বজন হারানোর পর...।’’

হিকমত উসামা নামের আরেকজন বলেন, ‘‘এই সব যুদ্ধ, ধ্বংস আর যা যা আমরা পার করেছি—তারপর আবার আনন্দে ফিরতে পারা, নতুন জীবন শুরু করা; এ এক অতুলনীয় অনুভূতি। আল্লাহর শুকরিয়া, ইনশাল্লাহ সামনে আরও ভালো দিন আসবে।’’

গাজায় এই গণবিয়ের আয়োজন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক দাতব্য সংগঠন আল-ফারিস আল-শাহিম ফাউন্ডেশন। যারা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় দীর্ঘদিন ধরে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছে।

সংগঠনটির গণমাধ্যমবিষয়ক কর্মকর্তা শরিফ আল-নাইরাব ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই জায়গাটি বেছে নিয়েছি এই বার্তা দেওয়ার জন্য ‘আনন্দের পোশাক’ আবারও শরীরে উঠবে।

‘‘গাজার মানুষ আবারও ধ্বংসাবশেষ থেকে উঠে দাঁড়াবে, গাজা আবার আনন্দে ভরে যাবে। ইনশাল্লাহ আমরা গাজার ভবিষ্যৎ পুনর্গঠন করব।’’

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর ইসরায়েল এবং হামাসের  যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় মানুষ ধীরে ধীরে তাদের জীবন পুনরায় শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতি বেশিরভাগ সময় ধরে বজায় থাকলেও মাঝে মাঝে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

সূত্র: এএফপি

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ