শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১১ পৌষ ১৪৩২ ।। ৬ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই : প্রেস সচিব আগামীকাল ১১টায় হাদির কবর জিয়ারত করবেন তারেক রহমান দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেটকারে ট্রাকের ধাক্কা, মা-শিশুকন্যার মৃত্যু গুলিস্তানের খদ্দর মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে দেশ, আরও বাড়তে পারে শীত ঢাকা-৮ আসনে লড়তে চান শহীদ ওসমান হাদির বোন মাসুমা উপদেষ্টারা না আসা পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থানের ঘোষণা ইনকিলাব মঞ্চের দেশ ও জাতির স্বার্থে সবধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে নতুন বার্তা দিলো ভারত তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে: মির্জা ফখরুল

দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায়ে হাজারো গাজাবাসি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

দীর্ঘদিনের যুদ্ধ বিরতির পর প্রথমবারের মতো গাজার মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ধ্বনিত হলো আজানের সুর, এবং ক্ষতবিক্ষত, ধ্বংসস্তূপে ঘেরা শহর জুড়ে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জুমার নামাজে অংশ নিয়েছিলেন হাজারো ফিলিস্তিনি। মসজিদ ফিলিস্তিনিদের জন্য শুধু নামাজের স্থান নয়, বরং তাদের আশ্রয়স্থলও। এক সপ্তাহ আগে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর এটিই ছিল প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে একত্রে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজ। 

গাজা উপত্যকার ধ্বংসপ্রাপ্ত ও অর্ধভাঙা অসংখ্য মসজিদে শুক্রবার দুপুরে একসঙ্গে তাকবির ধ্বনী—আল্লাহু আকবার—ভেসে আসে। গাজা নগরীর ঐতিহাসিক সাইয়্যেদ হাসেম মসজিদে নামাজ পড়ার পর স্থানীয় বাসিন্দা গালিদ আল-নিমরা আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, 'দুই বছরের বিচ্ছিন্নতার পর একসঙ্গে নামাজ পড়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।'

গাজা সিটির পুরনো অটোমান আমলের দরজা পেরিয়ে মুসল্লিরা দলে দলে মসজিদে প্রবেশ করেন। কেউ দাঁড়িয়েছিলেন, কেউ সিজদা করছেন, সবার চেহারায় ছিল গাম্ভীর্য, চোখে ছিল অশ্রু। হামাসের তথ্যমতে, গাজার মোট ১ হাজার ২৪৪টি মসজিদের মধ্যে ১ হাজার ১৬০টিই আংশিক বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। 

উত্তর গাজার বাস্তুচ্যুত এক বাসিন্দা আবু মাহমুদ সালহা বলেন, তার এলাকার আল-ফালুজা মসজিদ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তিনি এখন রাস্তায় নামাজ পড়েন এবং জুমার জামাতে ইমামের কণ্ঠ শুনতে তার মন ব্যাকুল হয়ে উঠে। অনেকে ভাঙা মসজিদে, আবার কেউ কেউ ধ্বংসস্তূপে বা খোলা আকাশের নিচে জায়নামাজ বিছিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন। 

বাস্তুচ্যুত মোয়াতাজ আবু শরবি বলেন, 'আমরা এখন বালির ওপর বা কার্ডবোর্ডে নামাজ পড়ি, এটা মানসিকভাবে ভীষণ কষ্টের। মসজিদ ছিল আমাদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু, আমাদের আত্মার আশ্রয়। ঘর হারানো যেমন বেদনার, তেমনি মসজিদ হারানো আরও গভীর আঘাতের।'

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের আলবানী মসজিদের ভগ্নাবশেষেও শুক্রবার শত শত ফিলিস্তিনি নামাজ পড়েন। দেওয়াল ভেঙে পড়া, ছাদ ধ্বসে যাওয়া সেই মসজিদে এক ইমাম লাউডস্পিকারে খুতবা দেন, আর উপস্থিতরা চোখ মুছে দোয়ায় মগ্ন হন। ২২ বছর বয়সী সালিম আল-ফাররা বলেন, 'আমরা আশা করি, গাজার সবকিছু এবং মসজিদগুলোও একদিন পুনর্নির্মিত হবে।' 

এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে, হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের অভিযানে নিহতদের মধ্যে ২২ হাজারের বেশি ছিলেন যোদ্ধা, আর অক্টোবর ৭-এর হামলায় ইসরায়েলের ভেতরে আরও ১ হাজার ৬০০ হামাস সদস্য নিহত হয়েছেন, যদিও সেই হিসাব নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।

সূত্র: টাইমস অফ ইসরায়েল, রোয়া নিউজ

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ