পবিত্র ভূখণ্ড আজ ধ্বংসস্তূপ, নেই কোনো অবকাঠামো, চোখে পড়ে না শিশুদের দুরন্তপনা। ফিলিস্তিনের গাজায় এতটাই ভয়াবহ আগ্রাসন চালিয়েছে দখলদার ইসরাইল যে এখানে যেন আর কোনো কিছুরই অস্তিত্ব টিকে নেই। তবে শান্তি চুক্তির প্রথম ধাপের পর ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। আর তাকে আরও বাস্তবে রূপ দিতে গাজা উপত্যকায় আসতে পারে তুরস্কের মুসলিম বাহিনী। দখলদার সেনাদের হাতে নির্যাতিত গাজাবাসীর ঘরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে অতন্দ্র প্রহরী হবে তুর্কি বাহিনী। আর মহান এই দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি প্রস্তুত এরদোয়ানের সেনারা।
তুরস্কের প্রস্তুতি ও টাস্ক ফোর্স গঠন
বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর গাজায় শান্তি বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক টাস্ক ফোর্স গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি মেনে ফিলিস্তিনের গাজায় শান্তি বজায় রাখার জন্য তুরস্কের সেনাবাহিনী যেকোনো মিশনে অংশ নেবে।
এ বিষয়ে আলোচনা করতে মিশরের শার্ম এল শেইখে একটি দল পাঠিয়েছে তুর্কি বাহিনী।
এই টাস্ক ফোর্সের অংশ হয়ে গাজা মিশনে যেতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনী। এর মাত্র একদিন আগেই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান গাজায় সেনা পাঠানোর ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন।
মার্কিন উদ্যোগ ও সিএমসিসি
ফিলিস্তিনে শান্তি ফেরাতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (CENTCOM) গাজায় টাস্ক ফোর্সটি তৈরি করবে। এটি সিভিল মিলিটারি কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (CMCC) নামে পরিচালিত হবে।
সংস্থাটির কাজই হবে গাজায় নিরাপত্তা সহায়তা এবং মানবিক সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করা।
এছাড়া যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে ফোর্সটি।
এএফপি'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দখলকৃত অঞ্চলে ২০০ মার্কিন সেনা পাঠাবে ওয়াশিংটন। তারা এই অঞ্চলের উগ্রপন্থীদের শান্ত রাখার কাজে নিয়োজিত থাকবেন। তবে তাদের কোনো সদস্যই পবিত্র সীমানায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
যুদ্ধবিরতির পর গাজার পরিস্থিতি
দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলা গাজায় অবর্ণনীয় হামলা থামিয়েছে ইসরাইল। মূলত আন্তর্জাতিক চাপ ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে নেতানিয়াহু সরকার। যদিও সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধী ছিলেন দখলদারদের দুই উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রী স্মোট্রিচ ও বেন গাভির।
যুদ্ধবিরতি কার্যক্রম শুরু হতেই গাজার ইয়োলো জোন থেকে সরে গেছে ইসরাইলি সেনারা। অন্যদিকে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই জীবিত ২০ বন্দীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দুই বছর পর নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছে ফিলিস্তিনের নিরপরাধ ও নিরস্ত্র গাজাবাসী।
এলএইস/