ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও কলম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি সমন্বিত জোট ‘হেগ গ্রুপ’ নিউ ইয়র্কে বৈঠক করেছে। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আসা বিশ্বনেতারা এই বৈঠকে অংশ নেন। (সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান)
বৈঠকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহামাদ হাসান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ইসরায়েলকে ‘গণহত্যার উপকরণ’ সরবরাহ থেকে বিরত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইসরায়েলের অবৈধভাবে ফিলিস্তিনি ভূমি দখলকে সমর্থনকারী বহুজাতিক সংস্থাগুলোকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও কলম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন গ্রুপটি ইসরায়েলের ওপর চাপ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ব্যবহারিক পদক্ষেপে গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে অস্ত্র ও দ্বৈত ব্যবহারের ভারী যন্ত্রপাতি ইসরায়েলে স্থানান্তর রোধ করা, বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে সম্মিলিত পদক্ষেপ বৃদ্ধি, গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙার জন্য ফ্লোটিলা সমর্থন এবং আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার আহ্বান।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা বলেন, “ক্ষোভকে কর্মে, আইনকে ন্যায়বিচারে এবং ন্যায়বিচারকে শান্তিতে পরিণত করতে হবে।” ব্রাজিল সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় যোগ দিয়েছে। ভিয়েরা বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে শুধু গণহত্যা থেকে বিরত থাকা নয়, প্রতিরোধও বাধ্যতামূলক।
গ্রুপের অন্য সদস্য চিলি ইতিমধ্যেই ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে। ফিলিস্তিনের জাতিসংঘ দূত রিয়াদ মনসুর মনে করেন, গ্রুপটি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং ইসরায়েলকে অস্ত্র ও পরিষেবা পাওয়া থেকে বিরত রাখতে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বাঁক’ হিসেবে কাজ করছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জেন ডাঙ্গর বলেন, গাজায় গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে বলে সাধারণ ঐকমত্য তৈরি হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রমাণ করা এখনো কঠিন। তবে গণহত্যা থামানো বিবেচনামূলক নয়, বাধ্যতামূলক।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা প্রায়শই গাজার বেসামরিক জনগণকে আক্রমণের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য লিফলেট এবং টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছেন।
এনএইচ/