গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন দেশটির আলোচিত মুসলিম সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। শেখ হাসিনাকে কেন আশ্রয় দেওয়া হয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, তাকে দিয়েই বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়ন শুরু করা উচিত।
ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াইসি এসব কথা বলেন।
মজলিস-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম)-এর প্রধান এবং হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি ভারত থেকে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করতে চায়, তা হলে তাদের পদচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েই সে কাজ শুরু করা উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের উদ্দেশে ওয়াইসির প্রশ্ন, ‘কেন আমরা হাসিনাকে এ দেশে আশ্রয় দিয়েছি? তিনিও তো একজন বাংলাদেশি!’
ওই সাক্ষাৎকারে ‘মিম’ প্রধান অভিযোগ করেন, মালদাহ ও মুর্শিদাবাদের দরিদ্র বাংলাভাষী ভারতীয়দের বিভিন্ন রাজ্য থেকে জোর করে ধরে এনে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ ছেড়ে দিয়ে আসা হচ্ছে!
মোদি সরকারের ‘বাংলাদেশি বিতাড়নের নীতি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে তিনি শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে কথা বলেন।
ওয়াইসি বলেন, ‘ঢাকায় যে জনপ্রিয় গণঅভ্যুত্থান ঘটে গেছে ভারতকে সেটি মেনে নিতে হবে এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। ভারতে একজন বাংলাদেশিকে রাখা হয়েছে, যিনি বিবৃতি ও বক্তব্য দিয়ে সমস্যা তৈরি করছেন।’
আসাদউদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ কীভাবে এসব মানুষকে আটক কেন্দ্রে রাখছে। এখানে সবাই যেন স্বঘোষিত আইনরক্ষক হয়ে উঠেছেন।
ওয়াইসি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিহারে চলমান ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় অনেক প্রকৃত নাগরিক; বিশেষ করে মুসলমানরা বাদ পড়তে পারেন।
আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, যদি এসআইআর হয় এবং প্রকৃত ভোটারদের নাম অন্তর্ভুক্ত না হয়, তাহলে তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ সময় তিনি বিহারে তার দলের অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
আলোচিত এই এমপি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় বলা আছে, যদি কোনো নির্বাচনী রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) কাউকে সন্দেহজনক মনে করেন বা তিনবার গিয়ে তাকে না পান, তাহলে তিনি নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। তার অভিযোগ, এ প্রক্রিয়ায় মুসলিম ভোটারদের নামই বেশি বাদ পড়ছে।
এমএম/