বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫ ।। ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১২ সফর ১৪৪৭


জুলাই ঘোষণাপত্র অপূর্ণাঙ্গ, সংশোধনের দাবি খেলাফত মজলিসের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রকে অপূর্ণাঙ্গ বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। 

আজ এক বিবৃতিতে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, গত ৫ আগস্ট ২০২৫ প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক ঘোষিত জুলাই সনদে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ শাসনামলে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার অপচেষ্ট চালানো হয়েছিল। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্ত্বরে অসংখ্য নিরীহ আলেম-উলামা ও ছাত্র-জনতাকে রাতের আঁধারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালানো হয়েছিল। ২০২১ সালের মার্চ মাসে নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে সংঘটিত বিক্ষোভে ভারতীয় তাবেদার সরকার গুলি চালিয়ে ২১জন মানুষকে হত্যা করেছিল। এই ধরণের সংগ্রাম তরুণ প্রজন্মের মননে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের বীজ বপন করেছিল। অথচ এসব গুরুত্বপূর্ণ ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। উপরোক্ত সংশোধনীগুলো জুলাই ঘোষণাপত্রে না থাকলে তা হবে অপূর্ণাঙ্গ, অভ্যুত্থানের চেতনা পরিপন্থি ও জাতির জন্য হতাশাজনক। আমরা অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধনের দাবি জানাই। 

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই সনদের ১ম দফায় প্রায় হাজার বছর ধরে বঙ্গ অঞ্চলের মানুষের ইসলামী মূল্যবোধ চর্চা ও রাজনৈতিক সফরকে কৌশলে অস্বীকার করা হয়েছে। ১৯৪৭ সালে প্রাপ্ত মানচিত্রের ভিত্তিতে ১৯৭১ সালে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল। জুলাই ঘোঘণাপত্রে ২৩ বছরের নিপীড়ক পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করলেও ১৯০ বছরের নিপীড়ক ব্রিটেনের নাম উল্লেখ করা হয়নি। মূলত এই ভূখণ্ডে মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ইতিহাসকে এড়িয়ে চলা ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অপকৌশলের অংশ। যা জুলাই স্পিরিটের সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।

নেতৃদ্বয় বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৩তম দফায় এক-এগারো সরকার ও ২০০৮ সালের পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ১৭তম দফায় অভ্যুত্থানের শহীদের সংখ্যা প্রায় ১হাজার উল্লেখ করা হয়েছে, যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখিত সংখ্যা থেকে অনেক কম। এছাড়া ১বছর অতিক্রান্ত হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদদের সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে। এখনো ৬জন শহীদের লাশ সনাক্ত না হওয়াতে মর্গে পড়ে আছে।

দৃশ্যমান সংস্কার সম্পন্নের দাবি জানিয়ে নেতৃদ্বয় আরও বলেন, গতকাল জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা পুনর্ব্যাক্ত করায় আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে নির্বাচনের পূর্বেই দৃশ্যমান সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি। গণহত্যার বিচারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রয়োজন। পেশীশক্তি, কালো টাকার প্রভাবমুক্ত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ