শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫ ।। ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১০ জিলহজ ১৪৪৬


প্রস্তাবিত বাজেটে বৈষম্য কমানোর কার্যকর পদক্ষেপ নেই: খেলাফত 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ আজ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটটি একটি প্রশাসনিক ধারাবাহিকতা হলেও, তা দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট, সাধারণ মানুষের জীবনমান ও বৈষম্য হ্রাসের বাস্তব দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বাজেটটিতে কাঙ্ক্ষিত কোনো মৌলিক সংস্কার, বৈষম্য নিরসন কিংবা দুর্নীতি প্রতিরোধের সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই।

নেতৃদ্বয় বলেন, প্রস্তাবিত প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটির ঘাটতি এবং ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার সুদ পরিশোধের বোঝা—স্পষ্ট করে যে জনগণের ওপর ঋণনির্ভরতা ও করের চাপ আরও বাড়বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত সীমা না বাড়ানো এবং ই-কমার্সসহ বিভিন্ন খাতে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরো দুর্বিষহ করে তুলবে।

তাঁরা বলেন, উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ হ্রাস এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কাটছাঁট করা, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করবে। পাশাপাশি, বিগত সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচারের দুঃশাসনের প্রেক্ষাপটে এ বাজেটে কোনো কঠোর জবাবদিহি বা সংস্কারপন্থা অনুপস্থিত থাকায় এটি জনআস্থার পুনঃস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরও বলেন, বাজেটে জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক আন্দোলনে আহত ও নিহতদের জন্য ৪০০ কোটির বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আমরা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখি। সরকার যদি সত্যিই মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে এ বরাদ্দ দিয়ে থাকে, তবে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে নিহত ও আহত হাজারো মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেও সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ থাকা উচিত ছিল। কারণ রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব সব নাগরিকের জন্য সমান হওয়া উচিত—তা রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনে করে—

বাজেটের নৈতিক ভিত্তি হবে জনগণের স্বার্থরক্ষা ও সম্পদের সুবিচার।

দুর্নীতির পথ বন্ধ করে স্বচ্ছ রাজস্বনীতি ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।

উৎপাদনমুখী খাত ও কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এবং সর্বোপরি, জনগণের আস্থা ফেরাতে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার অপরিহার্য।

তারা বলেন- অতএব, আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি— বাজেটটি পুনঃমূল্যায়ন করে এমনভাবে সংশোধন করা হোক, যাতে এটি সত্যিকার অর্থে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন, বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কার্যকর অবদান রাখতে পারে।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ