শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর ইমামের পেছনে নামাজ পড়তে মালদ্বীপে মুসল্লিদের ঢল আ.লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে সরকার পশ্চিমাদের দোহাই দেয় : সারজিস নারী সংস্কার কমিশন বাতিল না করলে আন্দোলনের দাবানল জ্বলবে: হেফাজত আটপাড়ায় হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধির সুপারিশ মজলিসে আমেলার বৈঠকে জমিয়ত, রাত পোহালেই কাউন্সিল কাল ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের গণমিছিল, প্রস্তুতি সম্পন্ন ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার না হলে আবারও ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেবে’ মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) সেবা ফাউন্ডেশনের কিতাব বিতরণ "পাশ্চাত্যের শক্তি নয় আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে এদেশের কোরআনপ্রেমী জনতা”

অমানবিক ‘লজ্জা’ সংস্কৃতি!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুমায়ুন আইয়ুব

অনলাইন পত্রিকার কল্যাণে শিরোনামের পাঠক বেড়েছে। লেখার শরীর-গতর নয়; শিরোনাম পড়েই সন্তুষ্ট থাকেন অধিকাংশ পাঠক। তবে ব্যতিক্রমও আছে। যারা গদ্যের রূপ, রস, গন্ধ, শুঁকে শুঁকে পাঠের গভীরে যেতে চেষ্টা করেন।

আমাকে দিচ্ছে ‘বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না’ অমানবিক স্লোগানটি দোকানে দোকানে সাঁটানো স্লোগানটির বিভৎস চেহারাটি ভেসে উঠছে চোখের কোণে।

লজ্জা ও নৈতিকতার চরম সংকটময় মুহূর্তে! মুদি ও ওষুধের দোকানে লজ্জার জন্য এ মায়াকান্নার সংস্কৃতি কতটা মানবিক? সমাজ মানেই তো ধনী-গরিবের সমবসবাস।

অভাব-অনটন আর সংকট-দুর্যোগ সে তো জীবনেরই অভিন্ন অধ্যায়। বরফ-পানির সম্পর্কের মতোই জীবন ও সংকটের সম্পর্ক। খরা-ভাটা ছাড়া কি জীবন গাঙের ছবি আঁকা যায়?
তাহলে সাময়িক অসুবিধায় পড়ে বাকি চাওয়া মানুষটির সঙ্গে এই পাশবিক ‘লজ্জা’ চর্চার অর্থটা কি? যে মানুষটি মাস শেষে বেতন বা পারিশ্রমিক পাবে! তবে এই মুহূর্তে পকেটে টাকা নেই! সামান্য ঋণ নেওয়ার জায়গাও নেই! তার শিশুটি কি দুধ না খেয়ে আজ ঘুমে যাবে? তার স্ত্রী কি ১২ টাকার ওষুধের অভাবে রাতভর কাতরাবে ব্যথার যন্ত্রণায়? এই কি মুদি ও ওষুধ দোকানিদের ‘লজ্জা’ সংস্কৃতি? সমাজের লজ্জা ও টাকা এতটাই অমানবিক!

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ ও মানবতার ফেরিওয়ালা হজরত মুহাম্মাদ সা.। তিনিও বাকি খেয়েছেন। খাবার বাকি নিয়েছেন একজন ইহুদির কাছ থেকে।

মুসলিম শরিফে আছে, আবু কাতাদাহ সূত্রে বর্ণিত হজরত মুহাম্মাদ সা. বলেন, যে ব্যক্তি কোনো অভাবি মানুষকে বাকির সুযোগ দেয়, কেয়ামতের মাঠে সে আল্লাহর রহমতের ছায়া পাবে। বুখারি শরিফে আছে, এক ব্যক্তি লোকদের বাকি পণ্যসামগ্রী দিত। লোকটি মারা যাওয়ার পর নবীজি সা. বললেন, সে মৃত্যুর পর আল্লাহর সাক্ষাতলাভ করেছেন, আল্লাহ তাকে অভাবীদের সঙ্গে এই বাকি অবকাশ দেওয়ার কারণে ক্ষমা করে দিয়েছেন। 

তাবারি শরিফে আছে আবু উমামা সূত্রে বর্ণিত, নবীজি সা. বলেছেন, একজন জান্নাতে প্রবেশ করলো। জান্নাতের দরজায় লেখা দেখলো, দান-সদকার প্রতিদান দশগুণ আর বাকি সুযোগ দেওয়ার প্রতিদান আঠারো গুণ। তবে বাকি লেনদেনের বেলায় ইসলামের অনুকরণীয় নীতিমালা হলো টাকা পরিশোধে সময় নির্ধারিত থাকতে হবে।

লেনদেন চুক্তি মৌখিক নয়, লিখিত থাকতে হবে। গ্রহিতা বাকি টাকা পরিশোধে কোনো রকম গড়িমসি করতে পারবে না। দাতাও অতিরিক্ত মুনাফা বা উপঢৌকন গ্রহণ করতে পারবে না। আল্লাহর রহমতের ছায়া, আল্লাহর সাক্ষাৎ ও ক্ষমাপ্রত্যাশীদের যাপিত জীবন থেকে বিদায় হোক অমানবিক ‘লজ্জা’ সংস্কৃতি। অবারিত হোক মানবতা! দুধ ও ওষুধের যাতনায় কষ্ট না করুক একজন মা ও শিশু!

হুআ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ