বিদায়ী আগস্ট মাসে সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৫৫২টি দুর্ঘটনায় ৫৬৩ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৬১ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
শুধু সড়কপথেই আগস্ট মাসে ৪৯৭টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৫০২ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৩২ জন আহত হন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ১৬৫টি, যেখানে নিহত হয়েছেন ১৭৬ জন এবং আহত হয়েছেন ১৪৪ জন।
বিভাগওয়ারি হিসেবে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে—১৩২টি দুর্ঘটনায় ১২৮ জন নিহত ও ৩৩৩ জন আহত হন। আর সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা হয়েছে বরিশাল বিভাগে—১৫টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ জন এবং আহত ২২ জন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—বর্ষায় সড়কের গর্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত অংশ, অবাধে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও নসিমন-করিমনের চলাচল, রোড সাইন ও রোড মার্কিংয়ের অভাব, সড়ক বাতি না থাকা, মিডিয়ান বা ডিভাইডারের অনুপস্থিতি, গাছপালায় অন্ধ বাঁক, মহাসড়ক ও যানবাহনের নির্মাণ ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য, উল্টোপথে যান চলাচল, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অতিরিক্ত যাত্রীবহন, বেপরোয়া চালনা এবং বিশ্রাম ছাড়া দীর্ঘসময় গাড়ি চালানো।
দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশগুলো হচ্ছে– বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সড়ক-মহাসড়ক জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কে ফুটপাতসহ সার্ভিস লেইনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন উন্নত বিশ্বের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে প্রয়োগ করা; সারা দেশে উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবত ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া; ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী চালকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ভ্যাট ও আয়কর অব্যাহতি দিতে হবে এবং মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা আমদানি ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
এমএইচ/