ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিন সরকার গঠনে আলোচনায় বসছে পশ্চিমাদের স্বীকৃত ফাতাহ ও স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। মস্কোতে বৃহস্পতিবার এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ফাতাহ ও হামাসের একাংশের নেতৃবৃন্দ আলোচনায় বসতে পারেন। ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিন সরকার গঠনের লক্ষ্যেই এ আলোচনা। ইসরায়েলি হামলায় গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহতের বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে এ আলোচনাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।
আল-জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি উলিয়া শাপোভালোভা বৃহস্পতিবার জানান, গত তিন ধরেই এ বৈঠক নিয়ে আলোচনা চলছে। যদিও এখনো বৈঠকটি নিয়ে ‘সংশয়’ রয়ে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত এটি হলে, সেখানে ফিলিস্তিন ইস্যুতে দুই পক্ষের ঐক্যবদ্ধ কৌশল গুরুত্ব পাবে।
শাপোভালোভা জানান, ‘রাশিয়া আগেও এমন আলোচনার আয়োজন করেছিল। এবার বৈঠক হলে, তা হবে এ ধরনের চতুর্থ বৈঠক। আলোচনায় রুশরা চাইবে ফিলিস্তিনের সব পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা তৈরি হোক।’
মস্কো থেকে ফিলিস্তিনী জাতীয় উদ্যোগের (পিএনআই) মহাসচিব মোস্তফা বারঘুতি আল–জাজিরাকে জানান, ‘আজ যেতমনটা দেখা যাচ্ছে, ঐক্যের জন্য তেমন আবহ আমি আগে কখনো দেখিনি। আমাদের লোকেরা যেসব বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গেছে, তা দেখার কারণে সবার মধ্যেই একটা দায়িত্ববোধ জাগ্রত হয়েছে।’
মুস্তফা জানান, আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে ভবিষ্যতের সমঝোতার সরকার, যার মূল মনোযোগ হবে গাজার বিভীষিকাময় পরিস্থিতি প্রশমনে কাজ করা। একই সঙ্গে এই সরকার গাজায় ইসরায়েলের জাতিগত নিধন প্রতিরোধে কাজ করবে। আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘এখানে এক অভিন্ন দায়িত্ববোধে সবাই আবদ্ধ। আমরা এমন কোনো বৈঠকের কথা বলছি না, যার আলোচনা দুদিনেই শেষ হয়ে যাবে। আমরা একটি প্রক্রিয়া শুরুর কথা বলছি, যা পূর্ণাঙ্গ ঐক্য প্রতিষ্ঠায় এবং একটি ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের দিকে আমাদের নিয়ে যাবে।’
তবে এ নিয়ে সংশয়ও রয়ে গেছে বিস্তর। বৈঠকের আগেই ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ মালকি বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এই আলোচনা থেকে ‘অভাবিত’ কিছু প্রত্যাশা করেন না। তিনি বলেন, ‘আমররা শুধু এই প্রত্যাশা করছি যে, সব পক্ষের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে একটি সমঝোতার সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় আমরা ঢুকব। মস্কোতে একটি বৈঠকের মধ্য দিয়েই অভাবিত কিছু ঘটে যাবে, এমনটা আমরা মনে করছি না। তবে এটা আশা করা যেতেই পারে যে, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে এ সম্পর্কিত আরও আলোচনার পথ উন্মোচিত হবে।’
এ বৈঠকের বিষয়টি এমন এক সময় সামনে এল, যখন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতায়েহ তাঁর সরকারের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার অধীকৃত পশ্চিম তিরের কিছু অংশ শাসন করে। এর কারণ হিসেবে তিনি তাঁর শাসনাধীন অঞ্চল ও গাজায় চলা সহিংসতার কথা উল্লেখ করেছেন।
হাআমা/
                              
                          
                              
                          
                        
                              
                          