যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর মানবাধিকার বিষয়ক ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাসন পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও কিছু বিষয়ে এখনও উদ্বেগ রয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা শিক্ষার্থী আন্দোলন এবং পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠনের সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন। এর তিন দিন পর, ৮ আগস্ট, রাষ্ট্রপতি শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন। আগস্টের ঘটনাবলীর পর মানবাধিকার পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা এলেও চ্যালেঞ্জ পুরোপুরি কাটেনি।
আগের সরকারের সময় যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়মিতভাবে নজরে এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে—
নির্বিচারে বা বেআইনি হত্যাকাণ্ড
গুম ও নির্যাতন
নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি
নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক
বিদেশে থাকা সমালোচকদের হয়রানি
মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ, যার মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা, হুমকি, অযৌক্তিক গ্রেপ্তার ও বিচার, এবং সেন্সরশিপ অন্তর্ভুক্ত
শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর বাধা ও শ্রম অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা হুমকি
শিশুশ্রমের গুরুতর রূপের উচ্চমাত্রায় উপস্থিতি
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই ও আগস্টে সাবেক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের হাতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। একই সঙ্গে দেশের বিচারব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অপরাধীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পূর্ববর্তী সরকার বা তার এজেন্টদের হাতে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি এবং তদন্তের স্বচ্ছ ব্যবস্থাও ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে এসব মামলার তদন্ত শুরু করেছে। অতীতে যেসব ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেখানে দোষী প্রমাণিতদের সাধারণত প্রশাসনিক শাস্তি দেওয়া হতো, তবে বর্তমানে এসব মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে।
এসএকে/