বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৬ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
এক লাফে ভরিতে ৮৩৮৬ টাকা কমল স্বর্ণের দাম জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী ১৮তম জাতীয় তাফসিরুল কুরআন মাহফিল ২০ ও ২১ নভেম্বর ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী ইহুদিদের চিঠি  গণভোট নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে জটিলতা তৈরির অভিযোগ জামায়াতের ‘পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে’ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞদের সাথে ঐকমত্য কমিশনের সভা শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিতে ছয় দফা সুপারিশ চিকিৎসকদের  ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কারাগারে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থী  ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার

শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিতে ছয় দফা সুপারিশ চিকিৎসকদের 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হৃদরোগ, ক্যানসারসহ নানা অসংক্রামক রোগ থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিতে ছয় দফা সুপারিশ করেছেন তরুণ চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, তামাক আইন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে আইনটি যদি সংশোধন না হয়।

বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা: তরুণ চিকিৎসকদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এই সুপারিশ করে।

সেমিনারে প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ডা. রামিসা ফারিহার সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ডা. ফারজানা রহমান মুনমুন।

গ্লোবাল ইয়ুথ টোব্যাকো সার্ভে ২০১৩-এর তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে ১৩–১৫ বছর বয়সী ছেলেদের ৯ দশমিক ২ শতাংশ এবং মেয়েদের ২ দশমিক ৮ শতাংশ ধূমপান করে। একই বয়সী ছেলেদের ৬ দশমিক ২ শতাংশ ও মেয়েদের ২ দশমিক ৯ শতাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করে। শিক্ষার্থীদের ৫৯ শতাংশ পাবলিক স্থানে এবং ৩১ দশমিক ১ শতাংশ বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে কিশোরদের মধ্যে তামাক ও ই-সিগারেট ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। তামাক কোম্পানিগুলো ডিজিটাল মাধ্যমে তরুণদের লক্ষ্য করে বিপণন চালাচ্ছে। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের আর বিলম্ব করা উচিত নয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, তামাক একটি নীরব ঘাতক, যা হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করে। এর ফলে প্রতিদিন শত শত মানুষ অকালমৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। তামাকজনিত রোগ জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বড় বাধা। তাই আইনটি যুগোপযোগীভাবে দ্রুত সংশোধন করতে হবে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ কর্মসূচির অতিরিক্ত পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, পরোক্ষ ধূমপান শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের জন্য ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। দেশে ১৫ বছরের নিচে ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নানা রোগে আক্রান্ত। 

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। প্রতি ১০ জনে ৪ জন পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে মারা যাচ্ছেন এক লাখ ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সেমিনারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি অনুযায়ী ছয়টি নীতিগত সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- সব পাবলিক স্থান ও গণপরিবহনে ধূমপানের নির্ধারিত স্থান বাতিল, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর) নিষিদ্ধ, শিশু-কিশোরদের সুরক্ষায় ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ, তামাকপণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রি নিষিদ্ধ, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। এগুলো করতে পারলে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো.আখতারউজ-জামান, অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী প্রমুখ।

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ