|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||
রোগীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হলে, আমরা প্রায়ই আত্মীয়স্বজনের দিকেই ঝুঁকি নেই। ভাবি, “আপন মানুষ, নিশ্চয়ই নিরাপদ হবে তার রক্ত।” কিন্তু বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন। আত্মীয়ের রক্ত মানেই নিরাপদ—এই ধারণা কতটা সঠিক?
আত্মীয়ের রক্ত: সুবিধা না বিপদ?
আত্মীয়ের কাছ থেকে রক্ত পাওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা মনে করা হয় সহজলভ্যতা ও বিশ্বাস। কিন্তু এই বিশ্বাসই কখনও কখনও হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। অনেক ভাইরাস আছে যেগুলোর বাহক ব্যক্তি সুস্থ মনে হলেও তার রক্তে জীবাণু থাকতে পারে। যেমন, হেপাটাইটিস বি ও সি , এইচআইভি (HIV), সিফিলিস, ম্যালেরিয়া , HTLV ইত্যাদি ।এই রোগগুলো ইনকিউবেশন পিরিয়ডে থাকলে সাধারণ পরীক্ষাতেও ধরা পড়ে না, যদি না উপযুক্ত স্ক্রিনিং করা হয়।
রক্ত পরীক্ষার গুরুত্ব:
আত্মীয় বলে অনেক সময় রোগ শনাক্তকারী পরীক্ষা বাদ পড়ে যায়। কিন্তু রক্তদানের আগে অবশ্যই প্রয়োজন—রক্ত গ্রুপ পরীক্ষা, HBV, HCV, HIV, VDRL স্ক্রিনিং, হিমোগ্লোবিন ও অন্যান্য মৌলিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা:
WHO-এর মতে, যেকোনো রক্ত ব্যবহারের আগে নির্ভরযোগ্য স্ক্রিনিং অপরিহার্য। আত্মীয় হোক বা অপরিচিত, রক্ত শুধু তখনই নিরাপদ, যখন তা পরীক্ষা করা হয়।
আত্মীয়ের রক্ত একদমই নিষিদ্ধ নয়, তবে তা পরীক্ষা ছাড়া গ্রহণ করা অত্যন্ত বিপজ্জনক। রক্ত মানে জীবন—তাই আত্মীয়তার চেয়েও বেশি জরুরি রক্তের নিরাপত্তা। এক ফোঁটা অব্যবহৃত রক্ত কখনো জীবন বাঁচাতে পারে, আবার অবিশ্বস্ত এক ফোঁটা রক্ত হয়ে উঠতে পারে মৃত্যুর কারণ।
এসএকে/