OUR ISLAM স্বাস্থ্য ডেস্ক
পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির মাংস খাওয়ার রেওয়াজ আমাদের সবার ঘরে-ঘরে। এই সময় মাংসের নানা আইটেম যেমন কাবাব, রোস্ট কিংবা ভুনা খাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরুর মাংস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু নির্দিষ্ট খাবার খেলে শরীরের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
মাংসের সঙ্গে দুধ জাতীয় খাবার নয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, গরুর মাংস খাওয়ার পরপরই দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার (যেমন: পায়েস, ফিরনি, দই ইত্যাদি) খাওয়া উচিত নয়। কারণ, মাংস ও দুধ—দুটিই উচ্চমাত্রায় প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং হজম হতে সময়সাপেক্ষ। একসঙ্গে খেলে শরীরের পরিপাকতন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাংসের সঙ্গে দুধ খাওয়ার ফলে হতে পারে:
- পেট ফাঁপা ও গ্যাস
- হজমে ব্যাঘাত
- ত্বকের সমস্যা বা অ্যালার্জি
- কোষ্ঠকাঠিন্য বা অ্যাসিডিটি
- দীর্ঘমেয়াদে আলসার ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি
তাহলে করণীয় কী?
স্বাস্থ্য পরামর্শ অনুযায়ী—
১.মাংস খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর দুধ বা দুধজাতীয় কোনো খাবার খেতে হবে
২.মাংস খাওয়ার পরপর যদি ভুলে দুধ জাতীয় কিছু খাওয়া হয়ে যায়, তবে কিছুক্ষণ হেঁটে শরীর সচল রাখা উচিত
৩.শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে আরও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা
ঢাকার এক পুষ্টি চিকিৎসক ডা. মাহবুবা শারমিন বলেন,
“দুধ ও মাংস একত্রে খেলে শরীরে প্রোটিনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, যা সরাসরি হজমপ্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়। বিশেষ করে ঈদের দিন খাবারের ভিড়ে এ বিষয়টি অনেকেই এড়িয়ে যান, যা অজ্ঞাতে শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”
ডেজার্টও হতে পারে বিপজ্জনক!
অনেকেই কোরবানির দিনের ডেজার্ট হিসেবে খিচুড়ির পর পরই দুধ, পায়েস বা ফিরনি পরিবেশন করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এগুলো যতই সুস্বাদু হোক না কেন, মাংসের পরপর নয়—সর্বনিম্ন ২ ঘণ্টা বিরতির পর গ্রহণ করাই উত্তম।
গরুর মাংস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হলেও তার সঙ্গে কিছু খাবার ভুলভাবে গ্রহণ করলে শরীরের জন্য বিপদ হতে পারে। কোরবানির আনন্দ যেন অসুস্থতায় পরিণত না হয়, সেজন্যই সচেতনতা অপরিহার্য।
তাই এ ঈদে স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রেখেই খাওয়া-দাওয়ার পরিকল্পনা করুন।
এনএইচ/