মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫ ।। ৪ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ২৫ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
শেখ হাসিনার মামলায় ট্রাইব্যুনালে ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন অধ্যাদেশ কিংবা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে : বুলবুল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা আর অর্জনের মাঝে বিস্তর ফারাক রয়েছে: জমিয়ত মহাসচিব দেশকে এগিয়ে নিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘নতুন প্রস্তাব’ পেল হামাস ‘ইসলামী ব্যাংকিংয়ের অগ্রযাত্রা টেকসই করতে শরিয়াহ অডিটর তৈরি করা জরুরি’ ভারতের ছয়টি বিমান ভূপাতিত করার ভিডিও আছে: পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘আলেমদের মধ্যে মূল উৎস থেকে গবেষণার আগ্রহ কম’ আ. লীগ আমলের প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: রিজভী ঢাকা-৮ আসন নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন রিকশা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা ফয়সাল

কাসাব্লাঙ্কা: সমুদ্রের গর্জন ও আজানের ধ্বনি যেখানে একাকার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| ড. শায়খ মাহমুদুল হাসান ||

ঘানা থেকে লন্ডন ফেরার পথে কাসাব্লাঙ্কায় পনের ঘণ্টার যাত্রাবিরতি ছিল। আমাদের বিরতিতে বিশ্রামের জন্য দেওয়া হলো- ‘হোটেল রিল্যাক্স’-এ রুম ও খাবার।

১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের কোনো এক সংবাদপত্রের ফিচারে পড়েছিলাম— কাসাব্লাঙ্কায় নবনির্মিত সপরিসর ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদের গল্প। তাই এ সুযোগে মসজিদটি পরিদর্শনের প্রবল আগ্রহ অনুভব করলাম। পাশাপাশি কাসাব্লাঙ্কার ঐতিহ্য পুরাতন ‘সূক’ (বাজার) দেখার পরিকল্পনাও করলাম।

মরোক্কোর গুরুত্বপূর্ণ মহানগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী হলো- কাসাব্লাঙ্কা। আরবিতে বলা হয়- ‘আদ্দা-রুল বায়দ্বা’। আটলান্টিক মরোক্কোর মধ্য-পশ্চিম অংশে চাউইয়া সমভূমির উপকূলে অবস্থিত জনবহুল শহর। গ্রেটার কাসাব্লাঙ্কায় ৪.২৭ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করে।

কাসাব্লাঙ্কায় সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান হলো- বাদশাহ হাসান দ্বিতীয় মসজিদ। এটি বিশ্বের অন্যতম বড় ও আকর্ষণীয় মসজিদ। মসজিদের সুউচ্চ মিনার ৬০ তলা সমপরিমাণ উঁচু। 

আটলান্টিক মহাসমুদ্রের গা ঘেঁষে মসজিদের দেয়াল দাঁড়িয়ে। সমুদ্রের সগর্জন ঢেউ এসে দেয়ালে চুমো এঁকে যায় প্রতি মুহূর্তে। সমুদ্রের গর্জন ও আজানের ধ্বনি এখানে একাকার হয়ে যায়।

মসজিদের অভ্যন্তরে পঁচিশ হাজার মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সালাত আদায় করে। আর বিশাল আঙিনায় আরও আশি হাজার মানুষ— মানে এক লাখ মানুষের জনাকীর্ণ ও বৃহৎ সমাবেশ হয় এ মসজিদে।

আমরা বিকালে মসজিদসংলগ্ন সমুদ্রপাড়ে পৌঁছে গেলাম। সুমসৃণ কুর্নিশে নানা পর্যটকদের সঙ্গে পায়চারি করে বিকাল অতিবাহিত করলাম। নানা মানুষ নানা পসরা সাজিয়ে বসে আছে। কেউ কেউ পাখি নিয়ে ছবি তুলে উপার্জন করছে। কেউবা নানা জাতের খাবার বিক্রি করছে।

মাগরিবের পনের মিনিট পূর্বে সূর্য যখন ডুবু ডুবু, মসজিদের গেইট খোলা হলো। পায়চারিরত ও অপেক্ষমান শত শত পর্যটক মসজিদের দিকে ছুটে এলো। বিশাল অজুখানা ছিল সুপরিচ্ছন্ন ও সুবিস্তৃত।

নামাজে ইমাম বেশ ভরাট কণ্ঠে তেলাওয়াত করলেন। মরোক্কার তেলাওয়াত একটু ভিন্ন। ওয়ারস আন-নাফে’ রেওয়ায়েত অনুসরণ করে এখানকার মানুষ। নামাজ শেষে সালামও শুধু এক দিকে ফেরানো হয় এখানে।

আটলান্টিকের এ পাড়ে দাঁড়ালে এখনো যেন মহা বিদ্বানদের (ইবনে বতুতা ও ইবনে খালদুনসহ আরও অনেকে) কলমের খচখচ শব্দ ও মুজাহিদদের অশ্বধ্বনি শোনা যায়। যাদের সেতু বেয়ে ইসলাম ইউরোপে পৌঁছেছিল বীরদর্পে। জ্বালিয়েছিল সভ্যতার নতুন মোহনীয় মশাল।

লেখক: ব্রিটেন প্রবাসী মুসলিম স্কলার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ