সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৩ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
ওমরায় গেলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসলামী আন্দোলন ক্ষমতায় গেলে এক টাকাও লুটপাট হবে না: শায়খে চরমোনাই কোরআন অবমাননার দায় স্বীকার সেই অপূর্ব পালের জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা দলগুলোর কর্মসূচি ঘোষণা তুরস্কে স্কলারশিপ পেলেন ৫ শিক্ষার্থী, এমবিএম ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা পাকিস্তানের শীর্ষ আলেম মাওলানা ফজলুর রহমান সিলেটে আসছেন ১৭ নভেম্বর জামায়াতের নির্বাচনি সভা ভণ্ডুল করে দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলায় দুই মাদরাসা শিক্ষককে হয়রানি, মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন চাঁদা না পেয়ে মসজিদের ইমামকে মারধর, স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনরত দলসমূহের যৌথ সংবাদ সম্মেলন

জুলাই ঘুরে ঘুরে আসবে, তবে ভুলে গেলে চলবে না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মাহমুদা মুন || 

জুলাই ক্যালেন্ডারে ফিরে আসে প্রতিবছর, কিন্তু তার চেতনা কেবল একটা মাসের আবদ্ধ স্মৃতি নয়। এটা একটা অনন্য আত্মত্যাগের গল্প, একটা আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি, আর একটা জাতিগত বেদনার নাম। চেতনার কথা বলে কেউ যদি নিজের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করে, সেটা শুধু চেতনাকেই অপমান করা নয়—শহীদদের আত্মত্যাগকেও অসম্মান করা। তাই, জুলাই মানে শুধু স্মরণ নয়, লালনও; শুধু আবেগ নয়, দায়বদ্ধতাও।

জুলাইয়ের সঠিক চেতনা ধারণ করতে হবে—চেতনার নামে নয়, চেতনার জন্য। শহীদদের রক্তের দাম গড়িমসি করে আদায় করা যায় না। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। কেন তারা রাস্তায় নেমেছিলেন, কেন তাঁদের জীবন দিতে হয়েছিল, সেই প্রশ্নগুলো ভুলে গেলে চলবে না। জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের জাতীয় স্মৃতির অমোচনীয় অংশ।

জুলাইয়ের স্মৃতির পাতা উল্টালেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কিছু ভয়াল দৃশ্য—যেন এক বিভীষিকাময় সময়ের চিত্রনাট্য। বিশেষ করে নীলক্ষেতের সেই রাত, ১৮ জুলাইয়ের সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া নিপীড়ন—আজও তা দুঃস্বপ্ন হয়ে ফিরে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো তখন ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল, ছাত্রলীগের সশস্ত্র দখলদারিত্বে। সব বন্ধ—কারেন্ট নেই, নিরাপত্তা নেই, শুধুই আতঙ্ক।

সেই রাতে একযোগে অপারেশন চালিয়েছিল পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি। টানা গুলি, লাঠিচার্জ, গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস—সবকিছুই যেন এক অঘোষিত যুদ্ধাবস্থার চিত্র। হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ঘটনাও শোনা গেছে—সাধারণ ছাত্রদের দমাতে এমন আক্রমণ?

চোখের সামনে কত সহযোদ্ধাকে রক্তাক্ত হতে দেখেছি। অনেককে মৃতদেহে পরিণত হতে দেখেছি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই—হাসপাতালে নেওয়ার আগেই নিভে গেছে তাঁদের জীবনপ্রদীপ। সেই দৃশ্য, সেই আর্তনাদ এখনো কানে বাজে। আজও রাতে ঘুম ভেঙে যায়—ট্রমা থেকে মুক্তি মেলে না।

আমরা তাঁদের আর ফিরে পাব না। তাঁদের পরিবারও আর পূর্ণতা পাবে না কখনো। কিন্তু আমরা যদি তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে না যাই, তাহলে তাদের আত্মাহুতি শুধু একটি দিনের স্মৃতিচারণে সীমাবদ্ধ থাকবে। সেটা যেন না হয়।

জুলাই শুধু অতীতের বেদনা নয়, ভবিষ্যতের শপথ। এই শপথ হোক দৃঢ়, এই চেতনা হোক বিকোণোর ঊর্ধ্বে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ