চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে গুরুতর আহত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মামুন মিয়ার মাথার খুলি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত শনিবার নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মামুনের খুলির অংশ প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় ভালো।
একই ঘটনায় আহত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদের অবস্থাও অনেকটা উন্নতির দিকে। দুই মাস ধরে দুজনই পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। ইমতিয়াজ এখন ফিজিওথেরাপি নিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাঈল হোসেন মামুনের মাথার খুলির প্রতিস্থাপন অপারেশনটি পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, ‘অপারেশনের পর কিছু জটিলতা থাকতে পারে, তাই বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়নি। তবে অপারেশন সফল হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’
গত ৩০ আগস্ট রাত থেকে ৩১ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারাও আহত হন।
সংঘর্ষে মামুন ও ইমতিয়াজ মাথায় গুরুতর আঘাত পান। প্রথমে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পার্কভিউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ওই সময় চিকিৎসকেরা মামুনের মাথার ক্ষতিগ্রস্ত খুলির অংশ অপসারণ করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন।
মামুন সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সংঘর্ষের সময় ধারালো রামদা ও চাপাতির আঘাতে তার মাথা ও ব্রেইনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে সময় জরুরি অস্ত্রোপচারে তার ১৩টি হাড়ের টুকরো অপসারণ করা হয়। চার দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ধীরে ধীরে তার অবস্থার উন্নতি হয়।
দুই মাস পর সেই সংরক্ষিত খুলির অংশ সফলভাবে প্রতিস্থাপন হওয়ায় পরিবার ও সহপাঠীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
এলএইস/