||মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজী||
ইসলামি দলগুলোর অন্য দলের সঙ্গে সমঝোতা বা জোট গঠনের বিষয়টিকে আমরা ইজতিহাদি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। এতে পারস্পরিক কাদা–ছোড়াছুড়ি ও অভিযোগ-অনুযোগ স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা কমে আসবে। এরপরে যদি কোনো দল অন্য দলকে ভুল পথে আছে বলে মনে করে, তবে তা অবশ্যই গঠনমূলক ও ভদ্র সমালোচনার মাধ্যমে প্রকাশ করা উচিত।
কেউ আমার মতো চিন্তা করে না, কিংবা কেউ আমার জোটে অন্তর্ভুক্ত হয় না—এই কারণে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা বা বাজে মন্তব্য করা কোনোমতেই কোনো ইসলামি দলের কর্মীর শোভা পায় না। আমি যদি কোনো ইসলামি দলের সমর্থক হই, তবু সবকিছু করার অনুমতি আমার নেই এবং কোনো দলকে পছন্দ করলেই আমার ওপর থেকে শরিয়তের বিধি-বিধান অকার্যকর হয়ে যায় না।
বিএনপি একসময় জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি ও নির্বাচন করেছে; কিন্তু বর্তমানে তারা আর সেভাবে চলতে প্রস্তুত নয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন হারিয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোট চেয়েছে; অথচ এখন তারা সেই ধানের শীষকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছে। আবার কিছু ইসলামি দল অতীতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে থাকাকালীন জামায়াতকে পাশে রেখে পথচলা স্বাভাবিক মনে করেছিল; অথচ সে সময় যে দলটি জামায়াতের সবচেয়ে কঠোর সমালোচক ছিল, তারাই এখন জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। সময়ের পরিবর্তনে নতুন কোনো দৃষ্টিভঙ্গিও আসতে পারে।
এই দিন–সেই দিন, একাল–সেকালের দৃষ্টিভঙ্গির এমন আকাশ-পাতাল পার্থক্য যখন প্রকাশ্য—তখন এক দল আরেক দলের বিরুদ্ধে এতো মরিয়া হয়ে লড়াই করার কারণ কী? নাকি যাদের বাড়াবাড়ি করার স্বভাব, তারা প্রতিটি আমলেই অতিরিক্ততা প্রদর্শন করে?
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হেদায়েত দিন, পরিমিতিবোধ দান করুন এবং সত্যের ওপর একতাবদ্ধ থাকার তাওফিক দিন, আমিন!
লেখক: মহাসচিব, ইসলামী ঐক্যজোট
এলএইস/