শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ।। ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১০ জিলকদ ১৪৪৫


মাহে রমজানে কুরআন তিলাওয়াত, গুরুত্ব ও ফজিলত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।। মুফতি সফিউল্লাহ ।।

রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াত খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমল । রমজানের রোজা রেখে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ক্ষমা পাওয়ার সুযোগও রয়েছে । কুরআন তেলাওয়াত রমজানের অন্যতম হক। কেননা রমজান মাস কুরআন নাজিলের মাস এবং রমজান মাসের সঙ্গে কোরআনের রয়েছে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক ।

আল্লাহ তাআলা মানবজাতির মুক্তির পথনির্দেশ হিসেবে রমজান মাসে কোরআন নাজিল করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَبَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَالۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ وَمَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَلَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَلِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَلِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَلَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ
‘রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে।’

‘আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।’
(সূরা আল বাকারা-১৮৫)

রমজানে হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পুরো কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। আবার নবিজীও প্রত্যেক রমজানে জিবরিল আলাইহিস সালামকে কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন।

কুরআন নাযিলের মাসে কুরআন তিলাওয়াত করে অন্য মাসের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়। এটা শুধু মাহে রমজানের বরকত। আর কুরআন তিলাওয়াত শুধু রমযানে নয়, একজন মুমিন বান্দার উচিত বছরব্যাপী কুরআনের সাথে এই সেতুবন্ধন অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখা।
কারণ এই কুরআন কিয়ামতের সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তে পাঠকারীর সঙ্গ দেবে এবং সুপারিশ করবে। আবু উমামা বাহেলী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

اقْرَؤُوا الْقُرْآنَ فَإِنّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لأَصْحَابِهِ.

তোমরা কুরআন পড়। কেননা কিয়ামতের দিন কুরআন তার ‘ছাহিবের’ জন্য সুপারিশ করবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮০৪)

আর আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন ছাহিবে কুরআকে বিশেষ মর্যাদা দান করবেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

يُقَالُ - يَعْنِي لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ -: اقْرَأْ وَارْتَقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدّنْيَا، فَإِنّ مَنْزِلَتَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَأُ بِهَا.

(কেয়ামতের দিন) ছাহিবে কুরআনকে বলা হবে, তুমি তিলাওয়াত করতে থাক এবং (উপরের দিকে) চড়তে থাক। তুমি উত্তমরূপে তিলাওয়াত করতে থাক যেভাবে দুনিয়াতে সুন্দরভাবে তিলাওয়াত করতে। কেননা তুমি যতটুকু পর্যন্ত পড়বে সেখানে হবে তোমার ঠিকানা। (জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯১৪)

তবে তেলাওয়াতে কোনোভাবেই তাড়াহুড়ো করা কখনো কাম্য নয়। সব সময় ধীরস্থিরতার সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করা উত্তম।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পবিত্র রমজানে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, চর্চা করার তাওফিক দান করুন, আমীন!

লেখক: শিক্ষক, শেখ জনূরুদ্দিন দারুল কুরআন মাদরাসা, চৌধুরীপাড়া, ঢাকা।

-একে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ