শনিবার, ২১ জুন ২০২৫ ।। ৭ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ২৫ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :
ইরানের ড্রোন হামলা, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করে বিস্ময় সৃষ্টি আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় ইসলামি শক্তির ঐক্য অপরিহার্য: ইবনে শাইখুল হাদিস পৃথিবীর শান্তি ও মানবতা ধ্বংস করছে ইসরায়েল, পতন অনিবার্য: হেফাজত  যে মাওলানার কাছে ভরাডুবি হয়েছিল সেই ফজলুর রহমানের হল না ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঢামেক শিক্ষার্থীদের, আন্দোলন চলবে নেত্রকোনায় জমিয়তের মজলিসে আমেলা অনুষ্ঠিত কওমিপড়ুয়া বিপুল জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগান, সন্দেহাতীত ভালো ফলাফল আসবে স্মৃতির ভিড়ে নানার মুখ হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত হলে সবার জন্য বিপজ্জনক হবে: ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভুল চিকিৎসায় কলরবের বদরুজ্জামানের শিশুপুত্রের মৃত্যু

ইজতেমার মাঠে জায়গা না পাওয়া মুসল্লি: ত্যাগ স্বীকার করতেই এসেছি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

৫৬ তম বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্বের দুইদিন আগেই লোকজন জমায়েত হয়ে গিয়েছেন মাঠে। মাঠে জায়গা না পেয়ে সামিয়ানা টানিয়েছেন রাস্তায়৷ প্রতিবার এমন সময় এসেও ময়দানে স্থান পান৷ এবারের ইজতেমায় পূর্বের রেকর্ড ভাঙা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সমাগমে এবার ময়দানে স্থান পাননি৷ তাদের সাথে কথা বলে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন আওয়ার ইসলামের ইজতেমা প্রতিনিধি, লেখক, আলেম মুযযাম্মিল হক উমায়ের


তুরাগ নদির তীরে চলছে তাবলিগ জামাতের সবচেয়ে বড় জমায়েত৷ এবারের ধর্মপ্রাণ লোকজনের উপস্থিতি পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে৷ লোকজন দুই দিন আগে এসেও ময়দানে স্থান পাইনি৷ আশ্রয় পেয়েছেন ফুটপাতে৷ জানতে চেয়েছিলাম তাদের দিনকাল কেমন চলছে৷ কয়েকজনের অনুভূতি নিচে তুলে ধরছি৷

রনি ভাই রাজশাহী থেকে এসেছেন৷ এটিই তার ইজতেমায় প্রথম আসা৷ স্থান পেয়েছেন কামারপাড়া রোডের রাস্তায়৷ জানতে চেয়েছিলাম ময়দানে জাগা না পেয়ে তার কেমন লাগছে৷ বললো, আলহামদুলিল্লাহ৷ ইজতেমায় শরিক হতে পারায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন৷ শত কষ্ট হলেই সামনের ইজতেমাতে অংশগ্রহণ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন৷ দোয়াও চেয়েছেন৷

কবির ভাই৷ আসছেন সিলেট কানাইঘান থানা থেকে৷ তিনিও জাগা পেয়েছেন রাস্তায়৷ উপরে কোনো সামিয়ানা নেই৷ জানতে চেয়েছিলাম অনুভূতিটা কেমন৷ তিনি জানালেন, রাস্তায় স্থান পাওয়াতে কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই৷ হাসি দিয়ে জানালেন, এখানে আসছিই কষ্ট করার জন্য৷ ত্যাগ স্বীকার করার জন্য৷ আরাম করার জন্য আসিনি৷ তিনিও জানালেন, সামনের ইজতেমাতেও অংশগ্রহণ করবেন৷

ভাই আফসার আলি৷ আসছেন জামালপুর বকশিগঞ্জ থেকে৷ অন্যরা সাথীরা ময়দানে স্থান পেলেও তারা কয়েকজন স্থান পেয়েছে ফুটপাতে৷ তিনি ২০১৪ সাল থেকে এই ময়দানে আসেন৷ জানতে চেয়েছিলাম অন্য সাথীরা ভিতরে আপনারা রাস্তায় এই বিষয়টি কষ্ট দেয় কি না৷ তিনি জানালেন, মোটেও না৷ কারণ, উপরওয়ালা আমাদের থাকার জন্য এই স্থানকেই বরাদ্দ করেছেন৷ আল্লাহ তায়ালার ফায়সালাতে আমরা সন্তুষ্ট৷ যারা ভিতরে তাদের ফায়দার জন্য আল্লাহ তায়ালা ময়দানের ভিতরে থাকার ব্যবস্থা করেছেন৷

রাস্তাভর্তি লোকজজন চলাচল করছে৷ তারা সকলের সামনেই খেতে বসেছেন৷ জানতে চেয়েছিলাম, লোকজনের সামনে খাওয়াতে কোনো সংকুচতা কাজ করে কি না৷ তিনি জানালেন, না৷ ভালোই লাগে৷ কারণ, তিনি এতো বড়ো মজমাতে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন মনে করেই অাল্লাহ তায়ালার কাছে কৃতজ্ঞ৷ সামনের ইজতেমাতেও আসবেন বলে মতামত দেন৷

ভাই মুহাম্মাদ ভাই৷ আসছেন শেরপুর থেকে৷ ইজতেমার মূল পর্বের দুইদিন আগে এসেছেন৷ কিন্তু স্থান পেয়েছেন রাস্তায়৷ প্রতিবার এমন সময় এসেও ময়দানে স্থান পান৷

এবারের ইজতেমায় পূর্বের রেকর্ড ভাঙা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সমাগমে এবার ময়দানে স্থান পাননি৷ জানতে চেয়েছিলাম, ভিতরে স্থান না পাওয়াতে নিজের কাছে কেমন লাগছে৷ জানালেন, দিলের আশা তো ছিলো ময়দানের ভিতরেই থাকতে পারার৷ কিন্তু কি আর করার৷ সবকিছুর ফায়সালা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকেই হয়৷ রাস্তায় থাকা, খাওয়া ও ঘুমানোতে কিছুটা কষ্ট অনুভব হলেও এতো বড় জমায়েতে অংশগ্রহণ করার আনন্দ সেগুলোকে ম্লান করে দেয়৷ আর এখানে তো কেউ আরাম করার জন্য আসেও না৷ মেহনত-মোজাহাদার জন্যই সকলে আসে বলে তিনি মতামত দেন৷ সামনের ইজতেমাও অংশগ্রহণ করার আশা ব্যক্ত করেন৷

ভাই মুহাম্মাদ সুলতান৷ আসছেন জামালপুর থেকে৷ স্থান পেয়েছেন কলম্পিয়া টেক্সটাইল ঘেঁসে রাস্তার দ্বারে৷ উপরে পলিথিন দিয়ে রাতে ঘুমান৷ নেই কোনো সামিয়ানা৷ জানতে চেয়েছিলাম তার অনুভূতির কথা৷

তিনি জানালেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় এই কষ্ট ত্যাগ করেই বের হয়েছি৷ শুধু আমিই না বরং এখানে যারা আসছে আমি মনে করি সকলেই কষ্টকে কোরবানী করেই এসেছেন৷ এখানে কেউ আরামের জন্য আসার নিয়ত করে আসিনি৷ তার সাথে থাকা অন্য সাথীরাও জানালেন এতো বড় মজমায় অংশগ্রহণ করতে পারাটাই বড় চাওয়া-পাওয়া৷ সামনের ইজতেমাগুলোতেও শতভাগ নিশ্চিত দিয়ে বললেন তিনি আসবেন৷ যদি আল্লাহ তায়ালা হায়াতে বাঁচিয়ে রাখেন৷

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ