মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১২ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
নির্বাচন সুষ্ঠ করতে দ্রুত বডি-ওর্ন ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার ‘তিনবারের বিশ্বজয় হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীকে স্মরণীয় করে রাখবে’ প্রাথমিকে জনআকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী পদক্ষেপ নেবে না সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা অভিমানী মানুষের মতোই বিদায় হাফেজ ত্বকীর এক মাসে ওমরাহ পালন ১ কোটি ১৭ লাখ মুসল্লি জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নতুন বাংলাদেশের পথ দেখাবে : প্রধান উপদেষ্টা হাফেজ ত্বকীর মৃত্যুতে মুরাদনগর উপজেলা কওমি তরুণ ওলামা পরিষদের শোক কেনিয়ায় যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত, আরোহী সবার মৃত্যুর শঙ্কা বারবার বিশ্ব দরবারে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন হাফেজ ত্বকী বিএনপি সাথে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বিশ্বে প্রতি তিন শিশুর দুজনই রোগা: ইউনিসেফ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সারা বিশ্বে প্রতি ৩ জনে ২ জন শিশু রোগা (কৃশকায়) বলে উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফের প্রতিবেদনে।

দক্ষিণ এশিয়া কৃশকায়তার 'কেন্দ্র' হিসেবে উল্লেখ করে ইউনিসেফ জানিয়েছে, এখানে প্রতি ২২ জনের মধ্যে প্রায় ১ জন শিশু রোগা (কৃশকায়), যা সাব-সাহারা আফ্রিকার তুলনায় তিন গুণ।

আফগানিস্তানে ১১ লাখ শিশু চলতি বছর কৃশকায়তার শিকার হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ২০১৮ সালের প্রায় দ্বিগুণ।

ইউনিসেফের 'কৃশকায় অবস্থা: শিশুদের বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে একটি উপেক্ষিত জরুরি অবস্থা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী অন্তত ১ কোটি ৩৬ লাখ শিশু কৃশকায় অবস্থার শিকার, যার কারণে এই বয়সী শিশুদের প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন মারা যায়।

ইউনিসেফ বলছে, কৃশকায় শিশুরা তাদের উচ্চতার তুলনায় খুব বেশি শীর্ণ হয়ে থাকে, যার ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। এটি অপুষ্টির সবচেয়ে তাৎক্ষণিক, দৃশ্যমান ও মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে পরিচিত তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবহারযোগ্য থেরাপিউটিক খাদ্য (আরইউটিএফ) পায় না।

ইউনিসেফের সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, উগান্ডার মতো স্থিতিশীল দেশগুলোতেও ২০১৬ সাল থেকে কৃশকায় শিশুর সংখ্যা ৪০ শতাংশ বা তার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য ও পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কারণে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য খাবারের গুণমান ও পরিমাণে অপর্যাপ্ততা তৈরি হয়েছে। তীব্র চক্রাকার খরা, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সেবা প্রাপ্তির পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকা এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত অভিঘাত ক্রমবর্ধমান এই সংখ্যায় অবদান রাখছে।

আফ্রিকায় খরা দেখা দিলে কৃশকায় শিশুর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়ে ১৭ লাখ থেকে ২০ লাখে পৌঁছাতে পারে, যেখানে সাহেল অঞ্চলে এই হার ২০১৮ সালের তুলনায় ২৬ শতাংশ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, কৃশকায় শিশুদের চিকিৎসায় প্রাপ্ত সহায়তা অত্যন্ত নিম্ন পর্যায়ে রয়ে গেছে; যা আগামী বছরগুলোতে আরও কমবে বলে ধারণা করা হয়। ২০২৮ সালের আগে প্রাক-মহামারি পর্যায়ে পুনরুদ্ধারের আশাও খুব ক্ষীণ।

নতুন বিশ্লেষণ অনুসারে, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য খাত ওডিএর (অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স) মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং মোট ওডিএর মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ ব্যয় হয় কৃশকায় শিশুদের চিকিৎসায়।

ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া এবং করোনা মহামারির অভিঘাতে আগামী ছয় মাসে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য থেরাপিউটিক খাদ্য বা রেডি-টু-ইউজ থেরাপিউটিক ফুডের দাম ১৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।জীবন রক্ষাকারী এই চিকিৎসা না পাওয়া শিশুর সংখ্যা আরও ৬ লাখ বাড়িয়ে দিতে পারে। পরিবহন ও সরবরাহ খরচও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করার আগেই সংঘাত, জলবায়ুজনিত অভিঘাত ও কোভিড-১৯ পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের খাদ্য যোগানের মূলে আঘাত করেছে। বিশ্ব দ্রুত প্রতিরোধযোগ্য শিশুমৃত্যু এবং কৃশকায় শিশুদের একটি ভার্চুয়াল টিন্ডারবক্সে পরিণত হচ্ছে।’

বিশ্বের ২৩টি দেশে কৃষকায় শিশুর সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে ইউনিসেফ বলছে, এসব দেশে অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্টেন্স (ওডিএ) সহযোগিতা আগের বছরগুলোর চেয়ে ৫৯ শতাংশ বেশি সহায়তা প্রদান করতে হবে।ওই দেশগুলোকে স্বাস্থ্য খাতের আওতায় কৃশকায় শিশুদের চিকিৎসা এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন তহবিল ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

পাশাপাশি বৈশ্বিক ক্ষুধা সংকট মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে কৃশকায়তায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য থেরাপিউটিক ফুডের জন্য নির্দিষ্ট বরাদ্দ থাকতে হবে।

এনটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ