শনিবার, ১১ মে ২০২৪ ।। ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৩ জিলকদ ১৪৪৫


শবে বরাতে ইবাদত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইফতিখার জামিল।।

ইবনে রাজাব হাম্বলি বলেন, সিরিয়ায় বসবাসকারী তাবেঈরা শবে বরাতকে বিশেষ সম্মান করতেন, শবে বরাতে গুরুত্ব দিয়ে ইবাদত করতেন। এদের মধ্যে মাকহুল, খালেদ বিন মা’দান ও লুকমান বিন আমেরের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

মুসলমানরা তাবেঈদের কাছ থেকেই শবে বরাতের আমলের বিষয়টি গ্রহণ করেছে। ইরাকের তাবেঈদের থেকেও শবে বরাতের গুরুত্ব প্রমাণিত। অবশ্য মক্কা-মদিনার অনেক তাবেঈ এতে দ্বিমত প্রকাশ করেন।

শামের তাবেঈদের মধ্যেও শবে বরাত নিয়ে একাধিক মত প্রচলিত ছিল। কেউ কেউ মসজিদে জামাতবদ্ধ ইবাদতে আগ্রহী ছিলেন, সুন্দর কাপড় পরিধান করতেন, মসজিদে রাত কাটাতেন।

বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইসহাক বিন রাহবাইহও একই মত পোষণ করতেন। অবশ্য শামের তাবেঈদের আরেকটি ধারা শবে বরাতে মসজিদে জমায়েত হতে অপছন্দ করতেন। তাদের মতে ব্যক্তি শবে বরাতে একাকী নামাজ আদায় করবে, জামাতবদ্ধভাবে নয়। শামের বিখ্যাত আলেম ইমাম আওযায়ীও এই মত পোষণ করতেন।

ইমাম শাফেয়ী বলেন, পাঁচ রাতে দোয়া কবুল হয়। রজবের প্রথম রাত, দুই ঈদের রাত, জুম্মার রাত ও শবে বরাত। এসব রাত সংক্রান্ত যেসব ফজিলত বর্ণিত হয়েছে, সেগুলোকে ইমাম শাফেয়ী মুসতাহাব মনে করতেন। ইবনে রাজাবকৃত লাতায়েফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ১৩৭।

শবে বরাতে একাকী, জামাতবদ্ধ ইবাদতের বিষয়টি সালাফদের থেকেই প্রমাণিত। যারা এ নিয়ে গালিগালাজ বা তাচ্ছিল্য করে, তারা প্রকারান্তরে সালাফদেরকেই গালিগালাজ করার সাহস দেখায়। শবে বরাত সংক্রান্ত হাদিসের মান নিয়ে আলোচনা হতে পারে। অবশ্য অনেকেই এ সংক্রান্ত কিছু জরুরী কথা ভুলে যান।

জঈফ হাদিস আর জাল হাদিস এক নয়। জাল হাদিস মানে বানানো হাদিস; জঈফ হাদিস মানে হাদিসের প্রামাণ্যতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন আছে, তবে বানানো হাদিস হিসেবেও ধরা যাচ্ছে না।

অনেক বিষয়ে শক্ত ও বহুল প্রচারিত সহি হাদিস না পাওয়া গেলেও আমল ছাড়া হয় না। সর্বসম্মত সহিহ হাদিস নেই মানে হাদিসের সনদটি সর্বসম্মত নয়, তবে সালাফের আমল পাওয়া গেলে জঈফ হাদিসের ওপরেও আমল করা হয়, এর অনেক দৃষ্টান্ত বিদ্যমান। অবশ্য অনেক ইমামের মতে শবে বরাত বিষয়ে বেশ কয়েকটি সহিহ হাদিস রয়েছে।

শবে বরাতে অনেকে ইবাদত করতে আগ্রহী হয়। তবে ফরজ ছেড়ে শুধু এই রাতের ইবাদতে ধর্মীয় দায়িত্ব পূর্ণ হবে না। অবশ্য যারা এই রাতে ইবাদত করতে আসে, তাদেরকে বাঁধা দেবারও সুযোগ নেই। যেহেতু বিষয়টি সালাফ থেকেই প্রমাণিত, পাশাপাশি এই অঞ্চলের মানুষ এ রাতের ইবাদতে অভ্যস্ত, তাই এ বিষয়ে বাঁধা দেওয়া যাবে না।

মানুষ অনেক বড় বড় গুনাহ করছে, সমাজ ও রাষ্ট্রে সংস্কার করার মতো অনেক বিষয় রয়েছে। এসব কিছু জেনেও কেন আম মুসলমানদেরকে ইবাদত থেকে বিরত রাখতেই সমস্ত শক্তি ব্যয় করা হবে?

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ