মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৮ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ খুলনায় হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক সার্বিক উন্নয়ন ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই: হাফিজ ফখরুল ইসলাম ফরিদপুরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণার গেট ও ব্যানার ভাঙচুর  জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: এ টি এম মাছুম জামায়াত আমিরের আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন যিনি খালেদা জিয়াসহ ৯ নারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন ২৩৭ আসনে বিএনপির ধানের শীষ পেলেন যারা নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলায় মতিউর রহমান আকন্দ নিন্দা বস্ত্রহীন ঘুমানোর হুকুম কী ?

ভারতের তামিলনাড়ুতে ৮ পরিবারের ৪০ জনের ইসলাম গ্রহণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আমিরুল ইসলাম লুকমান।।

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর থেনি জেলার দলিত সম্প্রদায়ের ৮ পরিবারের ৪০ জন সদস্য ঘোষণা দিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, গ্রামের উঁচু জাতের লোকদের পক্ষ থেকে নিয়মিত সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও নিগ্রহের শিকার হওয়ার ফলে তারা ধর্ম পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা মুম্বাই উর্দু নিউজ জানায়, ভীরা লক্ষী নামক একজন দলিত নারী নিজের ইসলামি নাম রেখেছেন রহিমা বেগম। তিনি বলেন, দিওয়ালির সময় জাতপাতের লোকেরা আমার স্বামীর উপর ভয়াবহ হামলা চালায়।

গত ৪ নভেম্বর উঁচু জাতের মানুষেরা আরেকবার আমার স্বামীর উপর আক্রমন করেছে। তারা আমার স্বামীর মোটর সাইকেল চালানো নিয়ে উস্কানীমূলক আপত্তি তুলেছে। আমি দেখেছি, এসব ক্ষমতাধর লোকেরা আমাদের মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সময় ইভটিজিং ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। আমাদেরকে ‘নিচু’ বলেই সবসময় আখ্যায়িত করে থাকে। এসব অন্যায় আচরণ ও অবমাননাকর পরিস্থিতির কারণে আমরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি।

রহিমা বেগম আরো বলেন, আমার স্বামী কালিক নানের বর্তমান নাম মুহাম্মদ ইসমাঈল। তিনি জন্মগতভাবে হিন্দু। বাল্যকাল থেকেই তিনি জাতপাতের বৈষম্যের শিকার। উচুঁ জাতের লোকেরা আমাদেরকে পুজা করার জন্য মন্দিরে প্রবেশ করতে দেয় না। ২০০৯ সালে উচুঁ জাতের লোকদের আবাসিক এলাকার রাস্তা দিয়ে আমাদের মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্য করতে যেতে দেয়নি। উল্টো আমাদের উপর হামলা করেছে। আমরা অনেক মানুষ রক্তাক্ত হয়েছিলাম।

সমাজব্যবস্থা উন্নত হয়েছে, কিন্তু আমরা নিগ্রহ থেকে মুক্তি পাইনি। দেওয়ালির ঘটনার পরই আমরা ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম। আমাকে মোটর সাইকেলে আরোহন করতে দেখে উচুঁ জাতের কিছু লোক হিংস্র হয়ে বলেছিল, দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ মোটর সাইকেলের মালিক হল কীভাবে!

নাগরাজ, যার বর্তমান নাম মুহাম্মদ মুস্তফা, তিনি বলেন, উচুঁ জাতের লোকেরা কারণে-অকারণে গণ্ডগোল করে, আর টার্গেট করে আমাদেরকে। কিছুদিন পর-পরই তারা এসব করে আমাদের উপর হামলা চালায়।

আমাদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে, লুটপাট চালায়। কেন আমরা এমন নৃশংতার শিকার হব? প্রশ্ন মুস্তফার। আমরা দলিতরা নিজেদের ভেতর আলোচনা-পর্যালোচনা করেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইসলামে সব মানুষের সমান অধিকার। কোনো জাতপাতের ভেদাভেদ নেই।

মুহাম্মদ মুস্তফা আরো জানান, আমি নিজের পিতা ও দাদাকে দলিত হওয়ার কারণে নির্যাতনের শিকার হতে দেখেছি। অথচ আমরা হিন্দু ছিলাম। আমি চাচ্ছিলাম, নির্যাতনের ধারাবাহিকতা বন্ধ হোক।

এদিকে ‘তামিল প্রেগুল পার্টির’ থেনি দক্ষিণের সেক্রেটারি মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ, যিনি পূর্বে হিন্দু ছিলেন, দলিত হিন্দুদের ধর্ম পরিবর্তনকে ‘জাতপাতের বৈষম্যের প্রতিবাদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ভারতবর্ষে ধর্ম পরিবর্তনের প্রধানতম কারণ জাতপাতের অন্যায় বৈষম্য।

জনাব জিন্নাহ আরো জানান, আমরা হিন্দু হওয়া সত্ত্বেও উঁচু জাতের লোকদের রাস্তায় চলাফেরা করতে দেয়া হয় না। তারা যে নাপিতের নিকট চুল কাটে, তাদের নিকট আমাদের চুল কাটতে দেয়া হয় না। এভাবেই আমরা লাঞ্ছনার শিকার হয়ে আসছি বহুকাল যাবত।

এদিকে ‘হিন্দু মানানি সংগঠনের’ নেতা অর্জুন সাম্পাত অভিযোগ করে বলেন, দলিত সম্প্রদায়ের লোকদের ধর্ম পরিবর্তনের পেছনে ‘ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া’ ও ‘পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া’-র হাত রয়েছে। অর্জুন সাম্পাত উঁচু জাত কর্তৃক দলিতের নির্যাতনের বিষয়টিও অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বৈষম্যমূলক কোনো সংবাদ আমাদের কাছে পৌঁছলে আমরা সঙ্গে-সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। আমরা অতিশীঘ্রই ডুম্বুচিরির দলিতদের সাথে কথা বলব। (সূত্র: মুম্বাই উর্দু নিউজ)

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ