শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
ফরিদপুরে দুই সহোদর হত্যা: ৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ তীব্র গরমে আলোকিত মানিকছড়ি জনকল্যাণ সংস্থার প্রশংসনীয় উদ্যোগ ফরিদপুরের দুই শহীদ পরিবারের পাশে হেফাজত নেতৃবৃন্দ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির ৭৫ নেতা বহিষ্কার ছাদ থেকে পড়ে মাদরাসাছাত্রীর মৃত্যু টানা তাপপ্রবাহে ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষায় রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ৫ নির্দেশনা ‘বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের সুযোগ রয়েছে’  মন্দিরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তভিত্তিক বিচারের দাবি ইসলামী আন্দোলনের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বিএনপির শিক্ষা নেওয়া উচিত: কাদের

সমালোচনার জন্য যাচাই-বাছাই ও দলীল-প্রমাণ চাই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দীন।।

কারও ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রদর্শনপূর্বক যে আলোচনা হয় সেটাই সমালোচনা। সমালোচনায় কারও ত্রুটি-বিচ্যুতি তথা দোষ নিয়ে আলোচনা হয় বিধায় সমালোচনা এক ধরনের অপবাদ। আর কারও সম্বন্ধে অপবাদ আরোপ করতে হলে অপবাদের অনুকূলে দলীল-প্রমাণ পেশ করা জরুরি।

হজরত আয়েশা রা,-এর প্রতি যারা ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করেছিল, কুরআনে কারীমে তাদেরকে শাসিয়ে বলা হয়েছে,

لولا جاءوا عليه بأربعة شهداء فاذ لم يأتوا بالشهداء فاولئك عند الله هم الكاذبون

অর্থাৎ, কেন এই লোকগুলো এ বিষয়ে চারজন সাক্ষী পেশ করল না? সুতরাং যখন এরা সাক্ষী পেশ করল না তখন এরাই আল্লাহর নিকট মিথ্যাবাদী। (সূরা নূর: ১৩)

এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় অপবাদের অনুকূলে সাক্ষী তথা দলীল-প্রমাণ পেশ করা জরূরী। অন্যথায় তা মিথ্যার শামিল হবে। সমালোচনাও যেহেতু এক ধরনের অপবাদ, তাই সমালোচনার অনুকূলে যথাযথ দলীল-প্রমাণ উপস্থাপিত হতে হবে। অন্তত সমালোচনাকারির নিজের কাছে যথাযথ দলীল-প্রমাণ থাকতে হবে। অন্যথায় সে আল্লাহর নিকট মিথ্যা বলার দায়ে অভিযুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, আয়াতটি যদিও ব্যভিচারের অপবাদ প্রসঙ্গে নাযেল হয়েছে, তবে উসূলে ফিকহের ইস্তিমবাত সংক্রান্ত প্রসিদ্ধ ফর্মুলা দালালাতুন্নস (دلالة النص)-এর ভিত্তিতে অন্যান্য অপবাদের ক্ষেত্রেও এর হুকুম প্রযোজ্য।

যে বিষয়ে কেউ সমালোচনা করতে চান সমালোচনা করার পূর্বে সে বিষয়ে যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। এ বিষয়টি প্রমাণিত হয় নিম্নোক্ত হাদীছ থেকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

كفى بالمرء كذبا ان يحدث بكل ما سمع

অর্থাৎ মানুষের মিথ্যুক হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে (যাচাই-বাছাই ছাড়া) তা-ই বর্ণনা করে দিবে। (মুকাদ্দামায়ে মুসলিম) অতএব কারও কোন দোষ শুনেই (বা অন্য কোনভাবে জেনেই) তার সমালোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া বিধিবদ্ধ নয়। যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে।

সমালোচনার ক্ষেত্রে উপরোক্ত দু'টো বিষয় তথা দলীল-প্রমাণ থাকা ও যাচাই-বাছাই করে নেয়া অত্যন্ত জরূরী। মিথ্যা ও অপবাদের কবীরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার জন্য জরূরী। অথচ দেখা যায় আমরা অনেকেই কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই, যথাযথ দলীল-প্রমাণ ছাড়াই অন্যের উপর নানান ধরনের অপবাদ চালিয়ে দেই। কিছু অপবাদ আছে গদবাধা, অবলীলায় যেগুলো আমরা একে অন্যের উপর চাপিয়ে থাকি।

যেমন: উনি অমুকের দালাল, অমুকের এজেন্ট, অমুকের পা চাটা গোলাম, অমুক থেকে মাল-পানি খেয়েছেন, অমুকের কাছে মাথা বিক্রি করে দিয়েছেন, উনার কথা ষড়যন্ত্রমূক, উনি বাতিল, ভণ্ড ইত্যাদি। যারা অন্য কারও প্রতি এ জাতীয় অপবাদ আরোপ করে থাকেন তাদের কাছে কি এগুলোর সপক্ষে উপযুক্ত দলীল থাকে? তারা কি যথাযথভাবে এগুলো যাচাই করে নেন? অধিকাংশের বেলায় উত্তর হবে 'না'। তবে কি তারা এভাবে অপবাদ আরোপ করাকে গোনাহই মনে করেন না? তাহলে তো তা আরও মারাত্মক গোনাহ হয়ে দাঁড়াবে। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করেন। আমীন!

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ