বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য জোটের জোরালো সমর্থন ভারতীয় আগ্রাসন নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে সর্বস্তরের ছাত্র জনতার মানববন্ধন প্রলোভনের ফাঁদ: 'কেন আমাদের সন্তানরা এত সহজে ধরা দেয়? দেশ গড়ায় কেবল নেতা নয়, নীতিরও পরিবর্তন করতে হবে : মাসুদ সাঈদী ইমাম দম্পতিকে নির্যাতনের প্রতিবাদে দুর্গাপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত জনগণকে ইসলামি বিপ্লব থেকে দূরে সরাতে চায় ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র হাসিনার বিচার না হলে জুলাই শহীদদের ওপর অবিচার হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচনের দিনই গণভোটে অটল বিএনপি: ড. মঈন খান নগরকান্দায় বিচারগান বন্ধ: 'ইসলাম পরিপন্থী' অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিল প্রশাসন রকমারির ‘১০-১০’ অফারে ৫ লক্ষাধিক পণ্যে বিশাল ছাড়!

'সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইফতেখাইরুল ইসলাম

চাচা মিয়াকে নিজ নামে প্রায়ই কেউই চেনে না, সবাই তাকে সোমার বাপ বলে ডাকে! চাচা মিয়ার ভাষ্যমতে তাঁর বয়স ৭০ এর উপরে। আমার সাথে প্রতিদিন একবার দেখা হয়। আমার আর চাচার একটা কমন বিষয় আছে, আমরা দুজন দুজনকে দেখলে একটা হাসি দেই... আমার চাচা মিয়াকে দেখলে মন ভাল হয়ে যায় এবং আমি বিশ্বাস করি চাচারও একই বিষয় ঘটে।

চাচার সাথে আমার পরিচয় হয়েছে ১০ মাসেরও বেশি। একদিন চাচা আমার অফিসে আসেন, এসে বলেন স্যার 'আমারে একটা কাজ দেন'! এত বয়স্ক লোক কাজ কেন করবে বলতেই- বললেন মেয়েটা লেখাপড়া করে, খরচ আছে পরিবারের। তাঁর স্ত্রী বাড়ি বাড়ি পানি দিয়ে বেড়ান! আর এখন চাচাও কাজ করতে চাচ্ছেন। বয়স্ক মানুষ হিসেবে কোনো সহানুভূতি নিতে রাজি নন তিনি। অবাক বিস্ময়ে আত্মসন্মানে বলীয়ান এক বৃদ্ধের চেহারায় আমি কী এক অহংবোধের ছায়া দেখতে পেলাম। আমি যখন বললাম- আমার অফিস তিন তলায় উঠতে গেলে আপনার অনেক কষ্ট হবে, চাচা প্রত্যুত্তরে বলেন- বসে থাকলে আমি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাবো স্যার! সেই থেকে তিনি আমাদের অফিস কক্ষের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করেন! আমার ইচ্ছে হয় তিনি আরাম করুন, কিন্তু বিধি বাম! তিনি অনুগ্রহ নেয়ার পাত্র নন।

আজ হঠাৎ মনে হলো চাচা মিয়ার সাথে একটু কথা বলি। বললাম- চাচা দাঁত তো একটিও নেই, খাবার কিভাবে খান? চাচা বললেন, মাড়ি দিয়ে খাবার চিবিয়ে খেতে খেতে মাড়ি শক্ত হয়ে গেছে এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।

খারাপ লাগে না জিজ্ঞেস করতে তিনি বললেন, একটু খারাপ লাগে তাতে কি স্যার " সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং"! আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, "ওহ মাই গুডনেস"! চাচা বলেন, স্যার ১৯৬২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছি আমি, ব্যাংকে চাকুরি করতাম!! আমার মাথায় রীতিমত বাজ পড়লো যেন! কাজকে কখনো ছোট করে দেখিনা স্যার আর এখন বিলাসিতার সুযোগও নাই। কোথায় যে কি লুকিয়ে থাকে আমরা তার কতটাইবা জানি, মানব চরিত্র এক বিশাল বিস্ময়ের আধার!

সোমার বাবা, চাচা মিয়া দারিদ্র্যের কষাঘাতে পিষ্ট হয়েও নিজের ব্যক্তিত্ব বিকিয়ে দেননি! ব্যক্তিত্বের প্রকাশে তিনি "সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং" এই প্রবাদকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন।

লেখক: সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডেমরা জোন)।
(লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত)

এসএস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ