বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
১৬ মাসে কোরআনের হাফেজ কক্সবাজারের ওবায়দুল করিম আমরা কোরআনকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যেতে চাই: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে শনিবার বিক্ষোভ করবে জামায়াত  প্রশাসনকে দ্রুততার সাথে বস্তুনিষ্ঠ ব্যবস্থা নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলন আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  যারা আমাকে অপহরণ করেছে তাদের বাংলাদেশি মনে হয়নি জীবন দিলেও যদি চরিত্র না বদলায় তাহলে ভাগ্যও বদলাবে না: শায়খে চরমোনাই শ্রীমঙ্গলে বেওয়ারিশ কুকুরের আতঙ্ক: এক ঘণ্টায় তিন শিশু আহত ‘দুঃখজনক হলো ইসলামি অঙ্গন থেকে শক্তিশালী মিডিয়া গড়ার উদ্যোক্তা আমরা পাইনি’ ২৪ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি: সারজিস

দর্জি থেকে দাওরা পরীক্ষার্থী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহবুবুর রহমান নোমানী

মুহাম্মদ ইদ্রিস। এখন তিনি মাওলানা ইদ্রিস। আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ-এর অধীনে অনুষ্ঠিত দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষার বয়স্ক পরীক্ষার্থী।

প্রবেশপত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ-০২-১২-১৯৬০। এ বছর তার মেয়ে মুতাওয়াসসিতা মারহালায় (৭ম শ্রেণি) বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে ছেলে মাহমুদ দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা দেয়ার কথা। কিন্তু তার দুটি বছর গ্যাপ হওয়ায় এ বছর মিরপুর আরজবাদ মাদরাসায় ফজিলত উলার (একাদশ শ্রেণি) বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে।

মাওলানা ইদ্রিস ছোট বেলায় মাদরসায় ভর্তি হলেও আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন লেখা-পড়া বেশিদূর করতে পারেননি। দর্জি কাজ শিখে দরিদ্র বাবার সহযোগিতায় লেগে যান। কিন্তু লেখা-পড়ার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ ছিল। সব সময় দোয়া করতেন, আল্লাহ যেন তাকে আলেম হিসেবে কবুল করেন। নিজ গ্রামের প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া থেকে (তিনি তখন সে মাদরাসার সেক্রেটারি) ছেলে পবিত্র কুরআনের হেফজ সমাপ্ত করার পর তাকে মালিবাগ মাদরাসায় ভর্তি করে দেন। মাঝপথে ছেলের লেখা-পড়ায় অমনোযোগী দেখে তাকে নিয়ে ২০১০ সালে তাবলিগে চলে যান। সেখানে গিয়েই তিনি নতুন করে ইলমেদ্বীন শিক্ষার প্রেরণা লাভ করেন।

তারপর দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মুফতি মিজানুর রহমানের কাছে কওমি মাদরাসার প্রাথমিক স্তরের আরবি কিতাব এবং মুফতি সুহাইলের কাছে কুদুরি পর্যন্ত ফিকাহর কিতাব পড়েন। এরপর টঙ্গীর সওতুল হেরা মাদরসায় সানাবিয়া উলইয়া জামাতে ভর্তি হয়ে এ বছর দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন।

এ বয়সে পড়াশোনাকে পড়া-প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজন আঁড় চোখে দেখলেও স্ত্রী সব সময় তাকে সাহস দিয়েছেন। আর মাদরাসার জীবনে তিনি পেয়েছেন উস্তাদগণের পরম ভালোবাসা। সহপাঠীদের শ্রদ্ধা ও মান্যতার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

পাঁজরের হাড়ের ক্ষয় হওয়াতে ফ্লোরে বসে পড়তে তার খুব কষ্ট হয়, তাই মাদরসার পক্ষ থেকে চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। লেখা-পড়ায় তার হিম্মত ও পরিশ্রম ঈর্ষণীয়। অযথা সময় নষ্ট করেন না।

মাদরাসার আইন-কানুনের প্রতি খুবই যত্মশীল। আগামীতে তিনি তাখাসসুস ফিল ফিকহে ওয়াল ইফতা পড়ারও ইচ্ছা রাখেন। এ ব্যাপারে স্ত্রীর অনুমতিও নিয়েছেন। আর জীবনের অবশিষ্ট দিনগুলো দ্বীনের প্রচার-প্রসারের খেদমতের ব্যয় করে যেতে যান।

মাওলানা ইদ্রিসের জন্মস্থান ঢাকার আশুলিয়ার কোনাপাড়া গ্রামে। সংসার জীবন নিয়ে তার কোনো টেনশন করতে হয় না। এলাকার বাজারে তার একটি টেইলার্স রয়েছে যেখানে কয়েকজন কর্মী খাটান তিনি। সেটি দিয়েই তার সংসার চলে যায়।

কওমির ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে যে সারল্য সহযোগিতা এবং অবিলাসী জীবন সেটি আর কোথাও পাইনি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ