সুফিয়ান ফারাবী,
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>
বেশ কয়েক দিন যাবত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড- বেফাকের নেতৃবৃন্দের অডিও ফোনালাপ। ফাঁস হওয়া ভয়েসগুলোতে আছে প্রশ্নপত্র ফাঁস, বেফাকের খাস কমিটি বাতিল, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগের তদবির, বর্তমান বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা যুবায়ের আহমদ চৌধুরীকে মাইনাস মিশনসহ নানা ষড়যন্ত্রের কথা।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অডিও ক্লিপে আলাপ করছেন- বাংলাদশে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের মহাসচিব ও আল হাইয়াতুল উলিয়ার ভারপ্রাপ্ত কো চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফ।
ভিন্ন আরেকটি কলে কথা বলেছেন- হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা পরিচালক এবং বেফাকের সহসভাপতি- মাওলানা আনাস মাদানী ও বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফ। আরও পাওয়া গেছে বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফ এবং ঢাকার ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল গনীর মধ্যকার নানা বিষয়ে কথোপকথন।
অনলাইন অফলাইনে অডিও রেকর্ড বিষয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। ফাঁস হওয়া চারটি অডিওর মধ্যে চারটিতেই বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফের কণ্ঠ শোনা যায়।
অডিও কলের সততা যাচাইয়ে বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফের একটি ফোনালাপ এমন- মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসকে বলতে শোনা যায়, নতুন নায়েবে নাজিম (সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক) একজন ঠিক করেন!
মুফতি আবু ইউসুফ: নতুন তো পাইতেছি না। আমিতো হুজুর খুব চেষ্টা করছি একজন নতুন নায়েবে নাজিমের জন্য। লোক তো পাইতেছি না।
মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস: আমি দিলে আপনি কি গ্রহণ করবেন?
মুফতি আবু ইউসুফ: আপনি দিলে গ্রহণ করমু না মানে? এটা প্রশ্ন কী করলেন? এটা তো আমার মাথার উপর থাকবে আপনি দিলে। যারে দিবেন কিন্তু।
মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস: আপনি এটা গ্রহণ করে কাজ করাবেন।
মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস: বেফাকে নম্বরে আওয়াল হইছে।
মুফতি আবু ইউসুফ: কাজকামু বুঝবনি? বয়স-টয়স কেমন হইছে?
মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস: বয়স-টয়স হিসাবে করে আপনারে কমুনে।
মুফতি আবু ইউসুফ: আচ্ছা। যদি হুজুরের হাতে থাকে ভাল হবে। অ্যাই আমার লগে যদি মুআফাকাত অয়, তাহলে উঠাইয়া লাইমু হুজুর। ইনশাআল্লাহ। হুজুর দিলে ঝামেলা নাই।
মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস: আমি যে দিছি কাউরে বইলেন না।
মুফতি আবু ইউসুফ: এটা শুধু আমার আপনের মধ্যে থাকব।
বেফাকের খাস কমিটির বৈঠক চলাকালে আরেকটি ফোনালাপে মাওলানা আবু ইউসুফ আনাস মাদানীকে ‘বাজানকে’ (হাটহাজারী হুজুর) বলে খাস কমিটি বাতিলের সুপারিশ করেন। হাটহাজারীর বিরুদ্ধে মাওলানা আনোয়ার শাহ, মুফতি ওয়াক্কাস, মাওলানা মুসলেহুদ্দীন রাজু ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন।
আরেকটি কলে মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস পরিচালনাধীন একটি মাদরাসার মিশকাত জামাতে অংশ না নেয়া ছাত্রদের পদোন্নতির ব্যাপারে আলোচনা করতে শোনা যায়। সেখানে কাগজপত্র রেডি করে সব ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিতে শোনা যায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে।
-এটি