একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর বিরুদ্ধে আনা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বা ‘একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততা’ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। তারা বলছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক হীনমন্যতা থেকেই বিভিন্ন সময়ে কেউ কেউ এমন অভিযোগ করে থাকেন।
শনিবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সিনিয়র প্রচার সহকারী মুজিবুল আলমের পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বিভ্রান্তিকর ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সচিব জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বিবৃতি দিয়েছেন।
এতে বলা হয়, ‘১ নভেম্বর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ‘‘একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কারণে জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে’’ মর্মে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা জাতীয় ঐক্যবিনষ্টকারী, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁর এ ধরনের মন্তব্যে স্পষ্ট বোঝা যায়, তিনি কাউকে খুশি করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাঁর বক্তব্যে কর্তৃত্ববাদী ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুর ধ্বনিত হচ্ছে। আমি তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বা ‘একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততা’ সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক হীনমন্যতা থেকেই বিভিন্ন সময়ে কেউ কেউ এমন অভিযোগ করে থাকেন। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে এই ধরনের প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছে। কিন্তু জাতি এখন এসব মিথ্যাচার সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে আলালের এ ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্য জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থী। বর্তমানে যখন দেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে জাতীয় ঐকমত্য ও পারস্পরিক সহনশীলতার প্রয়োজন, তখন তাঁর এই উসকানিমূলক মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার এবং জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকঙক্ষার পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, যার নীতি ও আদর্শ ইসলামী মূল্যবোধ, ন্যায়নীতি ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। জামায়াতে ইসলামী সর্বদা দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। অতএব, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক ও বিদ্বেষপ্রসূত।
বিবৃতিতে মাওলানা আবদুল হালিম বলা হয়, ‘ভবিষ্যতে জাতীয় ঐক্য ও বিভাজন সৃষ্টিকারী এবং বিদ্বেষপ্রসূত, বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি জনাব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
এনএইচ/